স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৬ ডিসেম্বর।। রাজ্যে অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর (সিভিল ডিফেন্স) সার্বিক নেটওয়ার্ক গড়ার কাজ চলছে। আর রাজ্যের জনগণ এর সুবিধা পেতে শুরু করেছে। ৫৯তম অসামরিক প্রতিরক্ষা ও গৃহরক্ষী বাহিনী দিবসে আজ প্রধান অতিথির ভাষণে রাজস্ব মন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা কথাগুলি বলেন।
আগরতলার মনোরঞ্জন স্মৃতি মাঠে রাজাভিত্তিক ৫৯তম অসামরিক প্রতিরক্ষা ও গৃহরক্ষী বাহিনী দিবস ২০২১ উদযাপিত হয়। অনুষ্ঠানে রাজস্ব মন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভৌগলিকভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি বিশেষ চিহ্নিত অঞ্চল।
১৮৯৭ এবং ১৯৫০ সালের ঘটে যাওয়া প্রলয়কারী ভূমিকম্প, ১৯৫৬ সালের ভয়াবহ বন্যায় ত্রিপুরায় ব্যাপক ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে দুর্যোগ মোকাবেলায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় ত্রিপুরা পরিপূর্ণতা পাচ্ছে। অত্যাধুনিক সরঞ্জাম দেওয়া হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে।
বিগত দিনে সিভিল ডিফেন্স বাহিনীর কাজ আগরতলা শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। রাজ্যে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ২৭ জুলাই থেকে রাজ্যের প্রতিটি জেলাতে অসামরিক বাহিনী পুরোদমে কাজ করতে শুরু করেছে। প্রতিটি জেলাতে ৫০ জন করে প্রশিক্ষিত অসামরিক কর্মী নিযুক্ত রয়েছে।
কর্মীদের সংখ্যা বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যাওয়াই সরকারের লক্ষ্য। শহরের প্রতিটি ওয়ার্ল্ডে একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সিভিল ডিফেন্স ওয়ার্ডেন এবং প্রতিটি ভিলেজ ও পঞ্চায়েতে আপদা মিত্র নিয়োগ করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, রাজ্যজুড়ে অসামরিক বাহিনীর সার্বিক নেটওয়ার্ক গড়ার কাজ করছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উৎসাহে বিপর্যয় মোকাবিলায় নানা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে। রাজস্ব মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি অনেক বেশি ঘূর্ণিরঝড়ের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রাজ্য সরকার রাজস্ব দুর্যোগ মোকাবিলায় আন্তরিক বলেই দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ তুলে দেওয়া যাচ্ছে এবং বিপর্যয়ের ১ সপ্তাহের মধ্যে বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষতিপূরণ জনগণ পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, সিভিল ডিফেন্স এবং হোমগার্ড সদস্যরা সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতিতে রাতদিন কাজ করে দুর্গতদের সহায়তা করেছেন বলে সরকার তাদের সম্মান জানানোর ব্যবস্থা করেছে। তিনি রাজ্যের জনগণকে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা সশস্ত্র বাহিনীর অভিবাদন গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ রাখেন রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক ভি এস যাদব। ৫৯তম অসামরিক, প্রতিরক্ষা ও গৃহরক্ষী বাহিনী দিবস উপলক্ষে ভারতের রাষ্ট্রপতি, ত্রিপুরার রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পাঠ করেন রাজস্ব সচিব তনুশ্রী দেববর্মা। দুর্যোগ প্রস্তুতির শপথ বাক্য পাঠ করান রাজস্ব মন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা।
অনুষ্ঠানে ৩ জনকে প্রেসিডেন্টস ফায়ার সার্ভিস মেডেল ফর মেরিটোরিয়াস সার্ভিস প্রজাতন্ত্র দিবস ২০২০ পুরস্কার, ২ জনকে কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য, ১ জনকে রক্তদানে, ১ জনকে অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিষ্ঠাবান কর্মী হিসাবে পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানে বিপর্যয় মোকাবিলা সামগ্রী প্রদর্শনীর ও অত্যাধুনিক ফায়ার বলকে অগ্নি নির্বাপক দপ্তরে অন্তর্ভুক্তি করেন অগ্নি নির্বাপক সপ্তরের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল। অনুষ্ঠান শেষে ভূমিকম্প এবং অগ্নিকান্ডের উপর মহড়া প্রদর্শন করা হয়।