অনলাইন ডেস্ক, ২৫ নভেম্বর।। লিবিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন না দেশটির প্রয়াত শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-ইসলাম আল-গাদ্দাফি (৪৯)। প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হিসেবে তিনি যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন তা বাতিল করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
আগামী ২৪ ডিসেম্বর লিবিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। গাদ্দাফি যুগের অবসানের পর লিবিয়াজুড়ে যে সংঘাত চলছে, তা থামাতে এই নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর সাইফ আল-ইসলাম আল-গাদ্দাফি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
এবারের নির্বাচনে সাইফ আল-ইসলামসহ মোট ৯৮ জন প্রার্থী প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এই তালিকায় রয়েছেন লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক বাহিনীর কমান্ডার খলিফা হাফতার, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ আল দিবাহ, পার্লামেন্টের স্পিকার আজুলা সালেহ প্রমুখ।
তবে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়াইয়ের তালিকা থেকে সাইফ আল-ইসলামসহ ২৫ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
এই তালিকায় রয়েছেন লিবিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আলি জেইদান ও সাবেক সংসদ সদস্য নৌরি আবু সাহমাইন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে এমন অভিযোগে মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে খলিফা হাফতারের।
লিবিয়ার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় নির্বাচনী আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট পদে লড়াই করার যোগ্যতা হারিয়েছেন সাইফ আল-ইসলাম।
২০১৫ সালে তাঁর অবর্তমানে ত্রিপোলির একটি আদালত সাইফ আল-ইসলামের নামে আমৃত্যু কারাদণ্ড ঘোষণা করেন। তাঁর বিরুদ্ধে গাদ্দাফির আমলে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ছিল।
২০১১ সালে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে মুয়াম্মার গাদ্দাফি সরকারের পতন ঘটে। বিদ্রোহীদের হাতে আটক হওয়ার পর গাদ্দাফিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এর পর থেকে দেশটির বিভিন্ন পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ওই সময় সাইফ আল-ইসলাম প্রথমে পালিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে আটক করে তাঁকে কারাগারে রাখা হয়। পরে মুক্তি পান তিনি।
লিবিয়ার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলেছিলেন, সাইফ আল-ইসলাম ভোটের ময়দানে তাঁর বাবার শাসনামলের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরার সুযোগ পেতেন।
যদিও অনেকেই মনে করছিলেন, ভোটে নিজেদের পক্ষে অনেক বেশি সমর্থকদের একত্র করা সাইফ আল-ইসলাম ও গাদ্দাফি শাসনামলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যেত। কেননা গাদ্দাফির নিষ্ঠুর শাসন এখনো অনেক লিবীয়র মনে আছে।
এবারের নির্বাচনে লিবিয়ার বিবদমান গোষ্ঠীগুলো ও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো সমর্থন জানালেও নতুন সরকারের কার্যপ্রণালিবিধি, ভোটের সময়সূচিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে।
ফলে ওই ভোট নির্ধারিত সময়ে হবে কি না, তা নিয়ে এখনো সন্দেহ রয়েছে। প্যারিসে এক সম্মেলনে গত শুক্রবার বিশ্বনেতারা একমত হয়েছেন যে যারা লিবিয়ার ভোটকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।