স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৫ নভেম্বর।। রাজ্যের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে আগামী প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের উপর। এই ছাত্রছাত্রীরা যেসব হোস্টেলে থেকে কোচিং নিয়ে থাকে সেই স্থানে মায়েদের উপস্থিতি থাকলে ছাত্রছাত্রীদের পঠন পাঠনের পাশাপাশি শিক্ষা স্থানের পরিবেশেরও উন্নতি সাধন হয়। কারণ ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মায়ের যোগাযোগ সবচেয়ে বেশি থাকে।
সেই দৃষ্টিভঙ্গি পাথেয় করে সার্বিক বিবেচনার মাধ্যমে শিক্ষা দপ্তর ‘মাদার অন ক্যাম্পাস’ প্রকল্প গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি জানান, এই প্রকল্প অনুযায়ী একসাথে দুইজনের বেশি মা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে হোস্টেলে থাকতে পারবে না। পর্যায়ক্রমে দুইজন করে ছাত্রছাত্রীর মা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে এক সপ্তাহের জন্যে থাকতে পারবে। সপ্তাহান্তে ছাত্র বা ছাত্রীর মা চলে যাবার সময় হোস্টেলের দেওয়া একটি অফিসিয়াল ফরমেট পত্র পূরণ করবেন।
প্রতি সপ্তাহে হোস্টেল সুপারিন্টেনডেন্ট হোস্টেলর সার্বিক সুবিধা অসুবিধা নিয়ে পর্যালোচনা করবেন। শিক্ষামন্ত্রী জানান, যদি কোন হোস্টেলে মায়েদের জন্য আলাদা থাকার ব্যবস্থাপনার অভাব থাকে তবে সেই হোস্টেলের ক্ষেত্রে আপাতত এই প্রকল্প স্থগিত থাকবে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রদের হোস্টেলের ক্ষেত্রে মায়েদের এই প্রতিবন্ধকতা থাকবেনা।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কোন স্থানীয় অভিভাবক থাকতে পারবে না। শুধুমাত্র বায়োলজিক্যাল অভিভাবক অথবা আইনত দত্তক নেওয়া মা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে হোস্টেলে থাকতে পারবেন। তিনি জানান, বর্তমানে সারা রাজ্যে তপশিলী জাতি, তপশিলী উপজাতি এবং সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তর পরিচালিত হোস্টেলগুলিতে মোট ৯ হাজার ৯৩৫ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। মোট হোস্টেল রয়েছে ২০৪টি।
রাজ্যের ৪,৪৬৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে গতকাল ৪,২৪৭টি বিদ্যালয়ে শিক্ষক অভিভাবক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই শিক্ষক অভিভাবক সভায় ২,৫৮, ৪৫০ জন অভিভাবক এবং ২৪, ১৪৪ জন শিক্ষক অংশ নিয়েছেন। আজ সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর অফিস কক্ষে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ সাংবাদিক সম্মেলনে এই সংবাদ জানিয়েছেন। তিনি জানান, এই শিক্ষক অভিভাবক আলোচনা সভায় ভাল সংখ্যক শিক্ষক অভিভাবক অংশ নিয়েছেন।
শিক্ষা মন্ত্রী জানান, সিপাহীজলা জেলার ৫৯৪টি বিদ্যালয়ে ৫৯,৪৭৮ জন অভিভাবক, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার ৬৩৪টি বিদ্যালয়ে ৩৮,৮৫৬ জন অভিভাবক, উত্তর ত্রিপুরার ৪৭০টি বিদ্যালয়ে ২৪,৮২৬ জন অভিভাবক, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সদর ব্যতীত ৪০৫টি বিদ্যালয়ে ২২,৩৬৬ জন অভিভাবক, ধলাই জেলার ৮১৮টি বিদ্যালয়ে ৩৪,৬৮৮ জন অভিভাবক, খোয়াই জেলার ৪৫৫টি বিদ্যালয়ে ২১,১২৭ জন অভিভাবক, ঊনকোটি জেলার ৩২৯টি বিদ্যালয়ে ২৭,৯৮৯ জন অভিভাবক এবং গোমতী জেলার ৫৩৯টি বিদ্যালয়ে মোট ২৯, ১২০ জন অভিভাবক এই মেগা শিক্ষক অভিভাবক সভায় উপস্থিত ছিলেন।
তিনি জানান, গতকাল শিশু দিবসের অনুষ্ঠান থাকায় খোয়াই জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আজ ক্লাস শেষের পর শিক্ষক অভিভাবক সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি আরও জানান, সদর মহকুমা এলাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের বেশি সংখ্যক শিক্ষক নির্বাচনী কাজে যুক্ত হওয়ায় গতকাল সদর এলাকার বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক অভিভাবক আলোচনা সভা করা সম্ভব হয়নি।
https://www.facebook.com/ratanlalnathmnp/videos/351526420118905/
তবে সম্ভবত আগামী ২১ নভেম্বর এই সভা করা হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী রতনালাল নাথ।সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যেই ১২ নভেম্বর সারা দেশের সাথে রাজ্যেও ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট সমীক্ষা ২০২১ সম্পন্ন হয়েছে। সারা রাজ্যে মোট ২৯ হাজার ৬৩৯ জন শিক্ষার্থী এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
রাজ্যে এই সমীক্ষার দায়িত্বে ছিল এস সি ই আর টি। মোট ৮৯৪টি স্কুলে ৯৫.১২ শতাংশ ছাত্রছাত্রী এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তিনি জানান, তৃতীয়, পঞ্চম, অষ্টম এবং দশম শ্রেণীতে যথাক্রমে ৫ হাজার ৬৩৫ জন, ৫ হাজার ৫৪৫ জন, ৮ হাজার ৬৬৫ জন এবং ৯ হাজার ৭৯৬ জন ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করে।
শতাংশের নিরিখে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ৯৭.৭০ শতাংশ, সিপাহীজলা জেলায় ১৭৫৩ শতাংশ, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ৯৬.১২ শতাংশ, খোয়াইয়ে ১১০২ শতাংশ, ধলাইয়ে ৯১.৯৭ শতাংশ, ঊনকোটিতে ৯৩.৬০ শতাংশ এবং উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ১৫.১১ শতাংশ ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকমহল, অভিভাবক, আধিকারিক সকলের সার্বিক সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে এই সমীক্ষা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।