Sentiment: বিভেদের মানসিকতা রয়েছে রাজনৈতিক দল এবং সরকারের মধ্যে, জানালেন মুসলিম নেতৃত্ব

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২ নভেম্বর।। সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই৷ বিভেদের মানসিকতা রয়েছে রাজনৈতিক দল এবং সরকারের মধ্যে৷ রাজ্যের সাম্প্রতিক অবস্থার সরেজমিনে খতিয়ে দেখে মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এই মন্তব্য করলেন সর্বভারতীয় পাঁচটি মুসলিম সংগঠনের যৌথ প্রতিনিধিদল৷

এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন জামায়াতে ইসলামী হিন্দ, অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিল৷ অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিসে মুশাররাত এবং মারকাজি জমিয়াতে আহলে হাদিস হিন্দ এর নেতৃত্ব৷ তারা দুই দিনের সফরে ত্রিপুরায় আসেন এবং উত্তর ত্রিপুরা পানিসাগর কৈলাসহর ঊনকোটি জেলা, সিপাহীজলা জেলা এবং আগরতলা এর দুটি ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ পরিদর্শন করেন৷

সাংবাদিক সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন রাজ্য পুলিশ এবং সরকারের ভূমিকা নিয়ে৷ তাদের বিবরণ সামাজিক মাধ্যমে ত্রিপুরায় মসজিদে হামলার ঘটনা এবং পরবর্তীকালে রাজ্য পুলিশ এবং সরকারের তরফে এসব হামলার ঘটনাকে ভূয়া প্রচার করার বিষয় নিয়ে দিল্লি থেকে এসে সরেজমিনে তদন্ত করেছেন৷

সরেজমিনে পরিদর্শন, এর পর তারা জানতে পেরেছেন ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষের মধ্যে কোনো বিভেদ ছিল না এবং নেই৷ কিন্তু রাজনৈতিক দল এবং সরকার নিজেদের ফায়দা লুটতে বিভেদ তৈরি করেছে৷ রাজ্যে বিশ্বহিন্দু পরিষদ এবং শাসক দল এক হয়ে আছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা৷

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যিনি পদাধিকারী তিনি শাসক দলের একই পদে কাজ করছেন বলে তারা অভিযোগ তুলেছেন৷ নির্দিষ্ট করে কিছু সংগঠন রাজনৈতিক দলের মদতে শান্তির পরিবেশ নষ্ট করে এসব হামলা হুজ্জতি করেছে বলে অভিযোগ৷ কিন্তু রাজ্যেরর শান্তিপ্রিয় মানুষ সঠিক সময়ে সব কিছু বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে এই পরিস্থিতি অরো খারাপ হয়নি বলে তাদের বিবরণ৷

সাংবাদিক সম্মেলনে তারা বলেছেন ত্রিপুরায় ১০টির বেশি মসজিদে হামলা হয়েছে৷ কয়েকটি মসজিদে আগুন লাগানো হয়েছে৷ মুসলিমদের দোকানপাট পোড়ানো হয়েছে৷ সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং গোটা দেশের জন্য ক্ষতিকারক৷ তারা বলেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়৷

ভারতবর্ষের মুসলিম সহ সব অংশের মানুষ গোটা বিশ্ব থেকে এর প্রতিবাদ করেছে৷ বাংলাদেশের ঘটনার পর সেই দেশের সরকার ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানায় এবং কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে৷ কিন্তু বাংলাদেশের ঘটনাকে ইস্যু করে ত্রিপুরা রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর নির্যাতনের ঘটনা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না৷

আশ্চর্যজনকভাবে ত্রিপুরায় হামলার ঘটনার পর রাজ্য পুলিশ প্রশাসন এবং সরকার হামলাকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি৷ এতে করে বাংলাদেশের সামনে ভারতবর্ষের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে ছোট করা হয়েছে৷ প্রশাসনের উচিত নিজেদের সম্মান বাঁচাতে এবং নিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া৷

তারা আরও অভিযোগ করেন ত্রিপুরা সফরকালে তারা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশ মহানির্দেশকের সাথে দেখা করতে চেয়েছেন৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কিংবা পুলিশ মহানির্দেশক সর্বভারতীয় মুসলিম সংগঠনের প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করেনি৷

মুখ্যমন্ত্রী সাংবিধানিক পদে থেকে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিদের এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন৷ এতে করে গোটা ঘটনায় সরকার এবং প্রশাসনের দুর্বলতা প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে৷ যৌথ সংগঠনের প্রতিনিধি দল গোটা ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ আধিকারিকদের বরখাস্তের দাবি করেছেন৷

আগামী দিনে তারা ত্রিপুরার ঘটনার নিয়ে দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছেন৷ প্রসঙ্গত, এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডক্টর এস তৈমি, ডক্টর সেলিম, নাবিদ হামিদ সহ অন্যান্যরা৷

 

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?