অনলাইন ডেস্ক, ৩ নভেম্বর।। গ্লাসগোয় চলমান জলবায়ু সম্মেলনে ১২০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যোগ দিয়েছেন। তবে প্রতিনিধি পাঠালেও প্রভাবশালী দুই দেশ চীন-রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান সম্মেলনে যোগ দেননি। যা নিয়ে প্রথম দিন থেকেই উষ্মা প্রকাশ করছেন সম্মেলনে যোগ দেওয়া প্রতিনিধিরা। তবে এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপ্রধান সরাসরি বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন।
মঙ্গলবারের বক্তৃতায় জো বাইডেন বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই চীন বিশ্ব রাজনীতিতে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে চাইছে। বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে চাইছে। অথচ তার প্রধান গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত! কী আশ্চর্য!’
আরও বলেন, আইসল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়া— পুরো পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় এখন পরিবেশ ও জলবায়ু। অথচ সেই সম্মেলনেই এলেন না চীনের প্রধান। এর থেকেই বোঝা যায়, চীন কেমন নেতৃত্ব দেবে।
রাশিয়াকেও এদিন এক হাত নিয়েছেন বাইডেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘রাশিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চল জ্বলছে। রাশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ভয়ংকরভাবে পড়তে শুরু করেছে। অথচ প্রেসিডেন্ট কিছু করছেন না। চুপ করে বসে আছেন। ’
বাইডেনের আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশ থেকে পর্যন্ত কোনো উত্তর আসেনি।
করোনার পর থেকে এখনো পর্যন্ত দেশ ছাড়েননি চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। যেক’টি সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন, সবক’টিই ভার্চ্যুয়াল। গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলনে কেন যোগ দিচ্ছেন না, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো কারণও জানাননি তিনি।
পুতিনও সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার কারণ স্পষ্ট করে জানাননি। তবে গত কয়েক সপ্তাহে রাশিয়ায় কভিডের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। সে কারণেই পুতিন আসেননি কি না, তা স্পষ্ট নয়।
২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ওই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রকে কার্যত তুলোধুনা করে বলেছিল, দেশটিই সবচেয়ে বেশি দূষণ ছড়াচ্ছে। এর কয়েক বছর পর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে করেন। যা নিয়ে বিপুল সমালোচনা হয়েছিল।
প্যারিস চুক্তি থেকে সরে যাওয়াকে কটাক্ষ করে এবার লিখিত বিবৃতিতে শি বলেন, ‘পাঁচ বছর নষ্ট হয়েছে। এবার আলোচনা কমিয়ে কাজের কাজ করতে হবে। ’
তবে গ্লাসগো সম্মেলনে চীনের প্রতিনিধিদের যথেষ্ট প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। কারণ, এই মুহূর্তে চীনই সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করছে।
এ দিকে পুতিন এক ভিডিওবার্তায় বলেছেন, রাশিয়ার বিশাল বনভূমি বিশ্বকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করবে। ওই বনভূমির ওপর নির্ভর করেই রাশিয়া ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বনমুক্ত দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে।
তবে সম্মেলনে যোগ দেওয়া পরিবেশবিদদের প্রশ্ন, প্রেসিডেন্ট কি আদৌ জানেন, রাশিয়ার বনভূমি রাশিয়ায় তৈরি হওয়া দূষণের কতটা শোষণ করতে পারে? রাশিয়ার প্রতিনিধি দল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।