অনলাইন ডেস্ক, ২৭ অক্টোবর।। হিরোশিমার পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে ফেরা সুনাও সুবোই মারা গেছেন। জীবনভর পরমাণু অস্ত্র-বিরোধী বার্তা প্রচারকারী এ ভুক্তভোগীর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের হিরোশিমার একটি হাসপাতালে ২৪ অক্টোবর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুবোই। রক্তস্বল্পতার কারণে অনিয়মিত হৃদকম্পনে তার মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হিরোশিমার ঐতিহাসিক স্থানে সফর করেন। তখন সুবোই ও ওবামা দীর্ঘসময় কথা বলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একদম শেষ দিকে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট যখন সুনাও সুবোই-এর বয়স ২০ বছর তখন তার শহরে পারমাণবিক বোমা ফেলে আমেরিকা। ওই বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়ে এক প্রকার অলৌকিকভাবে বেঁচে যান সুবোই।
তার কানের একটি অংশ একদম পুড়ে যায়। বোমা হামলার ৪০ দিন পর তার জ্ঞান ফেরে, যখন যুদ্ধ শেষ। তিনি এতই দুর্বল ও শরীর ক্ষত-বিক্ষত ছিল যে, মেঝেতে হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হতো। ২০১৩ সালে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুনাও সুবোই বলেন, এতে কোনো ভুল নেই যে, তার আমাদের খুন করতে চেয়েছিল। বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমার আক্রমণে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় হিরোশিমা। তাৎক্ষণিক ও কয়েক মাসের মধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা যায়। এর তিন দিন পর নাগাসাকিতে দ্বিতীয় বোমা পেলে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে মারা যায় আরও ৭০ হাজার মানুষ। এরপর ১৫ আগস্ট আত্মসমর্পণ করে জাপান।পুরো আক্রমণকে ‘নির্মূলীকরণ’ বলে উল্লেখ করেন সুনাও সুবোই।
জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক সুবোই তরুণদের মাঝে পরমাণু অস্ত্র-বিরোধী শিক্ষা ছড়িয়ে দিয়ে আইকনে পরিণত হন। তাকে ডাকা হতো ‘পিকাডন সেনসেই’ নামে, যেখানে রয়েছে ‘বোমা’ ও ‘শিক্ষক’ দুই শব্দের সমন্বয়। সুবোই-এর লড়াই, বিশেষ করে পরমাণু অস্ত্র-বিরোধী প্রচারণায় তার ট্রেডমার্ক লাইন ছিল ‘কখনো হাল ছেড়ো না।’ সুনাও সুবোই-এর মৃত্যুতে জাপানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ও পরমাণু অস্ত্র-বিরোধীরা শোক প্রকাশ করেছেন।