স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৮ অক্টোবর।। আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালে সম্প্রতি এক জটিল অস্ত্রোপচার বিভিন্ন মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। প্রায় ঊনিশ কেজি ওজনের টিউমার অপারেশন করে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ এক গর্ভবতী মায়ের প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন।
ধলাই জেলার ছামনুর বাসিন্দা ২৬ বছরের গর্ভবতী মহিলা অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের সদস্যা। তাকে সংকটজনক অবস্থায় সম্প্রতি জিবিপি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তিনি আট মাসের গর্ভবতী ছিলেন। চিকিৎসকগণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মহিলার ডিম্বাশয়ে ১৮.৭ কেজি ওজনের টিউমারের উপস্থিতি সুনিশ্চিত করেন।
পনেরো দিনের মধ্যে এই টিউমারটির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেছিল বলে চিকিৎসকদের ধারণা। এটি এত বড় ছিল যে গর্ভবতী মহিলা ঠিকমত শুতে পারতেন না, দাঁড়াতে ও বসতেও তার খুব অসুবিধা হত। দৈনন্দিন কাজকর্মও তিনি করতে পারতেন না। তিনি খুব দুর্বল হয়ে পড়েন এবং তার খাদ্য গ্রহণেও অসুবিধা হত।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে তার চারবার গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়েছিল। ডিম্বাশয়ের টিউমার সম্পর্কে তিনি অজ্ঞাত ছিলেন। জিবিপি হাসপাতালে প্রসূতি স্ত্রীরোগ বিভাগের ইউনিট দুই চিকিৎসকগণ প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে এই ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারটি করেন। প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞে চিকিৎসক ডাঃ জে এল বৈদ্য ও ডাঃ সুমিত দাস এই অস্ত্রোপচারটি করেছেন।
এনেসথেসিস্ট ছিলেন ডাঃ অসিত ভট্টাচার্য এবং সিস্টার ইনচার্জ ছিলেন শিবানী ভট্টাচার্য ও জোৎস্না দাস। গর্ভবতী মহিলার টিউমারটির সফল অস্ত্রোপচার করে রোগীর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হলেও মৃত সন্তান প্রসব করেন তিনি।
অস্ত্রোপচারের পর জিবিপি হাসপাতালেই তার চিকিৎসা হয়। পরবর্তী সময়ে মহিলা তার স্বামীর সঙ্গে সুস্থ দেহে বাড়ি ফিরে যান। এই দুরূহ অস্ত্রোপচারের সাফল্যে রোগীর পরিবার পরিজন খুব খুশি।
পাশাপাশি এর ফলে রাজ্যের চিকিৎসকদের উপর জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস আরও বৃদ্ধি পাবে বলে দপ্তর মনে করছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা এক প্রেস রিলিজে এই সংবাদ জানিয়েছেন।