স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৭ সেপ্টেম্বর।। আসন্ন শারদোৎসবে রাজ্য সরকার এককালীন ব্যবস্থা হিসাবে সকল ক্যাটাগরির স্থায়ী সরকারি কর্মচারি ও অর্থদপ্তরের অনুমোদিত ডিআরডব্লিও কর্মীদের ফেস্টিভ্যাল অ্যাডভ্যান্স ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
আজ বিধানসভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে কর্মচারিগণ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ফেস্টিভ্যাল অ্যাডভান্স নিতে পারবেন। এটি আগের তুলনায় প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
উপমুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, রাজ্য সরকারের নির্বাচিত শ্রেণীভুক্ত কর্মচারি যেমন পিটিডব্লিউ বা অনুরূপ ক্যাটাগরির কর্মচারি যারা অর্থদপ্তরের পূর্বের সম্মতিতে নিযুক্ত, অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার / হেল্পার এবং হোমগার্ড যারা ফেস্টিভ্যাল অ্যাডভ্যান্স পাওয়ার জন্য বিবেচিত নয় তাদের ক্ষেত্রে ফেস্টিভ্যাল গ্র্যান্ট (উৎসব অনুদান) ১ হাজার থেকে বেড়ে ১ হাজার ২০০ টাকা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গিয়ে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে অতিরিক্ত ১৮৬৬৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
এর ফলে রাজ্যের অর্থনীতি যেমন চাঙ্গা হবে তেমনি ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার সহ শ্রমিকরাও আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন। এই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের সরকারি কর্মচারিদের কল্যাণ এবং রাজ্যের অর্থনীতির বিকাশের প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার প্রকাশ পায় বলে উল্লেখ করেন উপমুখ্যমন্ত্রী।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা ২০১৮ সালে রাজ্যে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠার পর সরকারের জনকল্যাণমুখী বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলেন, নতুন সরকার রাজ্যের সামগ্রিক বিকাশ এবং সরকারি কর্মচারিদের কল্যাণে বিশেষ নজর দিয়েছে। তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বেতন সংশোধনের জন্য গুণিতক ফ্যাক্টর সর্বোচ্চ ২.৫৭ পর্যন্ত সংশোধন করা হয়েছিলো।
রাজ্যে সরকার ২০১৭ সালের পর থেকে ইউজিসি সুপারিশকৃত বেতন স্কেল অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মেডিক্যাল কলেজের ফ্যাকাল্টিদের বেতনও সংশোধন করেছে। তিনি জানান, রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের বেতন স্কেল সংশোধনের সময় রাজ্য সরকারের অধীনে নিযুক্ত শ্রমিকদের মজুরিও ১-১০-২০১৮ সাল থেকে সংশোধন করা হয়েছে।
তিনি জানান, কোভিড অতিমারী প্রতিকূল সময়েও সরকারি কর্মচারিদের ১ এপ্রিল ২০২১ থেকে ৩ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের মাসিক সাবস্ক্রিপশন এবং ইন্সুরেন্স কভারেজও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি জানান, কোভিড অতিমারীর মধ্যেও রাজ্যে সরকার মুখ্যমন্ত্রী কোভিড স্পেশ্যাল রিলিফ প্যাকেজ এবং মুখ্যমন্ত্রী স্পেশ্যাল রিলিফ ফুড প্যাকেটর অন্তর্গত ডিবিটির মাধ্যমে প্রায় ৭ লক্ষ পরিবারকে ১ হাজার টাকা প্রদান করার পাশাপাশি ফুড প্যাকেটও দেওয়া হয়।
কোভিড অতিমারীকালীন সময়ে ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার্স, হেলথ ওয়ার্কার্স, শিক্ষক কর্মচারীগণ, অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স প্রমুখ যারা নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন তাদের ধন্যবাদ জানান উপমুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রত্যন্ত এলাকা বিশেষ করে জনজাতি এলাকায় কোভিড টিকাকরণ একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ ছিলো।
কিন্তু সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এক্ষেত্রে সফলতা এসেছে। কোভিড টিকাকরণে রাজ্য সরকার বিশেষ অভিযান গ্রহণ করায় ত্রিপুরা উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন উপমুখ্যমন্ত্রী।