স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৫ সেপ্টেম্বর।। কর্মক্ষেত্রে সরকারি আধিকারিকদের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সরকার। গতানুগতিক প্রথার উর্দ্ধে উঠে ব্যতিক্রমী কাজের মধ্যদিয়েই সরকারি আধিকারিকগণ মানুষের মন জয় করে নিতে পারেন।
আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত ত্রিপুরা সিভিল সার্ভিস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। সম্মেলনে মূখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা সিভিল সার্ভিস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন ও একটি স্মরণিকার আবরণ উন্মোচন করেন। সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে সাত লক্ষ টাকার একটি চেক মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনকল্যাণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরাকে আত্মনির্ভর রাজ্য হিসাবে গড়ে তুলতে টিসিএস অফিসারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সম্মেলনে নির্দিষ্ট সিস্টেমের অজুহাতের বদলে স্বচ্ছতার সাথে টিসিএস আধিকারিকদের জনকল্যাণে আরও বেশি করে আত্মনিয়োগ করার উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বা এফসিআই-এর মাধ্যমে সহায়ক মূল্য ধান ক্রয়, যেখানেই সিস্টেমের নামে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে, সেখানেই ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনার মাধ্যমে সমাধানের স্থায়ী পথ বের করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। এক্ষেত্রে সফলতাও এসেছে।
জনকল্যাণে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে আধিকারিকদের আরও বেশি আন্তরিক হতে হবে। সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, টিসিএস অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের স্বচ্ছ নিয়ম নীতি প্রতিফলিত হয়েছে। বিগতদিনে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকার কারণে অনেক প্রতিভাবান কৃতিরা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে আগ্রহ দেখায় নি।
কিন্তু অতি সম্প্রতি যারা, কোন ধরণের পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই মেধার ভিত্তিতে নিজেদেরকে প্রমাণ করেছেন সেই তালিকাতেই সরকারের স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যতিক্রমী কাজের মধ্য দিয়েই মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়া সম্ভব।
ব্যক্তি নয় কাজের গুরুত্বই সবচাইতে বেশি। কর্মক্ষেত্রে প্রতিকূলতাকে জয় করে জনকল্যাণের পথ বের পারলেই স্বার্থকতা মিলবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সুযোগ সব সময় আসে না। বর্তমানে রাজ্যে একটি ইতিবাচক বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
এই সুযোগকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে সার্থকতা আসবে। অফিসার থেকে অন্ত্যোদয়, রাজনৈতিক পক্ষ বা প্রতিপক্ষ, এই সরকার জনতার সরকার। রাজ্যের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মসূচির সুফল পৌঁছে দেওয়াই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে সময়ের কাজ সময়ে শেষ করার উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি বলেন, রাজ্যে কোভিড অতিমারী পরিস্থিতিতেও টিসিএস আধিকারিকগণ নিষ্ঠার সাথে কাজ করে সমগ্র দেশের মধ্যে নজির তৈরি করেছেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব জে কে সিনহা বলেন, যেকোন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে রাজ্যের টিসিএস অফিসারগণ কাজের মধ্য দিয়ে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছে।
জনসেবায় এর চেয়ে বড় অনুভূতি আর কিছুই হতে পারে না। এই পেশার মাধ্যমে সর্বদা মানুষের সঙ্গে থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়। বিগতদিনে রাজ্যে যখন বিভিন্ন জনপদে সড়ক পৌঁছায়নি, সেই সমস্ত জায়গাতেও জনকল্যাণে বিভিন্ন পরিষেবা নিয়ে পৌঁছে গেছেন টিসিএস আধিকারিকগণ।
সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সিভিল সার্ভিস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দিলীপ কুমার চাকমা, সাধারণ সম্পাদক অসীম সাহা সহ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যগণ।