School: শিক্ষক স্বল্পতা সহ নানা সমস্যায় ধুঁকছে কদমতলা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগ

স্টাফ রিপোর্টার, কদমতলা, ২৪ সেপ্টেম্বর।। শিক্ষক স্বল্পতা সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত কদমতলা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি।শিক্ষক স্বল্পতার ধরুন শিক্ষার গুণগত মানে ভাটা পড়েছে। রয়েছে পানীয় জলের সংকটও।বারবার জেলা শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের কাছে আবেদন জানিয়েও সমস্যা সমাধানের কোনো প্রতিশ্রুতি মিলেনি। সমস্যা যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। দাবি উঠছে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপর।

উত্তর জেলার কদমতলা কূর্তী বিধানসভা কেন্দ্রে অবস্থিত কদমতলা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৪৯ সালে স্হাপিত হয়। স্কুল স্হাপনের পর থেকেই স্হানীয় বিধানসভা সহ আশপাশ এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের উক্ত স্কুলটি পঠন পাঠনের একমাত্র ভরসা ছিল।গোটা উত্তর জেলার অন্যান্য স্কুলের সাথে তাল মিলিয়ে কদমতলা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিও সুনামের সঙ্গে ঐতিহ্য কুঁড়িয়ে নিয়েছিল। তারপর ১৯৬৫ সালে দুপুরের সাথে প্রাথমিক বিভাগও শুরু হয় উক্ত বিদ্যালয়টিতে। কিন্তু বর্তমানে পূর্বের সেই সুনাম ও ঐতিহ্য আজ বিলীনের পথে।

সম্প্রতি কদমতলা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগে শিক্ষক স্বল্পতার ধরুন কচিকাঁচা ছাত্র ছাত্রীদের পঠন পাঠন লাঠে উঠেছে।অভিভাবক মহলের কপালে চরম দুশ্চিন্তার ভাঁজ।মূলত উক্ত স্কুলে প্রাথমিক বিভাগে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত দুইশো বাষট্টি জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে।তারমধ্যে প্রথম শ্রেণীতে পঞ্চম জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ছাপ্পান্ন জন, তৃতীয় শ্রেণীতে পঁয়তাল্লিশ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে বাহান্ন জন‌ ও পঞ্চম শ্রেণীতে ঊনষাট জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। কিন্তু শিক্ষকের সংখ্যা সাকুল্যে দুই জন।

কখনো আবার দুই জন শিক্ষকের মধ্যে একজন অসুস্থতা অথবা ছুটিতে থাকার কারনে স্কুলে আসেন না।তখন একজন শিক্ষকই প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত দুইশো বাষট্টি জন ছাত্র ছাত্রীদের ক্লাস করাতে হয়।তাতে করে একজন শিক্ষক প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের রোল কল করাতে করাতে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে দশটা বেজে যায় বলে অভিভাবকদের অভিমত।

অভিভাবকদের অভিযোগ, দুজন শিক্ষক উপস্থিত থাকলে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের কপালে এক দুটা ক্লাসের পঠন পাঠন জুটে।এককথায় শিক্ষক স্বল্পতার ধরুন শিক্ষার গুণগত মান দিনকে দিন তলানিতে গিয়ে ঠেকছে।আর তার খেসারত পোহাতে হচ্ছে নবপ্রজন্মের ছাত্র ছাত্রীদের। অভিভাবকরা আরো অভিযোগ করে বলেছে, করোনা আবহের ফলে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল।

কিন্তু সম্প্রতি চলতি মাসের তেরো তারিখ স্কুল খোলার পর দুজন শিক্ষক দ্বারা কদমতলা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগের পঠন পাঠন কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছেনা।তাই স্হানীয় অভিভাবকরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষক প্রদানের জোরালো দাবি তুলেছেন। অন্যথায় কচিকাঁচা ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যত অন্ধকারে ধাবিত হবে।

এদিকে কচিকাঁচা ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে এসে পুঁথিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায়।তাই অতি তৎপরতার সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষক শিক্ষিকার দাবি জানায় ছাত্র ছাত্রীরা।অপরদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামাচরন দেববর্মা বলেন,বর্তমানে প্রাথমিক বিভাগের অপর শিক্ষক ছুটিতে রয়েছেন।

তাই তিনি একাই পাঁচটি ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রাথমিক বিভাগের দুজন শিক্ষক দ্বারা দুইশো বাষট্টি জন ছাত্র ছাত্রীদের কোনভাবেই ক্লাস করানো সম্ভব নয়। শিক্ষক স্বল্পতা নিয়ে প্রধান শিক্ষক জেলা শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অর্থাৎ ডি ই ও এর নিকট বারবার লিখিত ভাবে জানালেও কোন বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ।

পাশাপাশি স্কুলটিতে রয়েছে পানীয় জলের তীব্র সংকট। যদিও সাপ্লাই রয়েছে ।কিন্তু সেই সাপ্লাই দিয়ে সচরাচর পানীয় জল আসেনা।তাই পানীয় জলেরও ব্যবস্থা করুক সংশ্লিষ্ট দপ্তর।এখন দেখার বিষয় রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর ঐতিহ্যবাহী কদমতলা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগের দিকে কতটুকু দৃষ্টিপাত করে।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?