Trading: বাংলাদেশের সাথে রাজ্যের ব্যাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারিত হয়েছে, জানালেন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২১ সেপ্টেম্বর।। বাংলাদেশের সাথে রাজ্যের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখন অনেকটাই সম্প্রসারিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের সাথে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে ত্রিপুরা।

ত্রিপুরা ক্রমশ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হয়ে উঠছে। আজ প্রজ্ঞাভবনে ত্রিপুরার রপ্তানি সম্ভাবনা ও প্রদর্শনী বিষয়ক রাজ্যভিত্তিক এক সেমিনারের উদ্বোধন করে একথা বলেন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব। সেমিনারের উদ্বোধন করে তিনি বলেন, বিদেশের সাথে বাণিজ্য সম্প্রসারণের কাজ এখন জোর গতিতে চলছে।

এজন্য বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সাক্রমে ফেনী নদীর উপর মৈত্রী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে সরাসরি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে কাজে লাগিয়ে আমদানি ও রপ্তানি করা সম্ভব হবে। ভারতের স্বাধীনতা লাভের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অংশ হিসেবে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের রাবার বোর্ড ও ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেডের যৌথ উদ্যোগে এবং রাজ্য শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সহায়তায় এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রজ্ঞাভবন চতুরে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়ে আয়োজিত প্রদর্শনীর সূচনা করেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব।

আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অংশ হিসেবে রাজ্য বাণিজ্য দপ্তর গতকাল থেকে বাণিজ্য সপ্তাহের আয়োজন করেছে। চলবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আজ প্রজ্ঞাভবনে আয়োজিত সেমিনার ও বাণিজ্য উৎসবের অন্যতম থিম ছিল ভারতকে একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে তুলে ধরা।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিতিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায়, আগরতলাস্থিত বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনার মহম্মদ জোবায়েদ হোসেন, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের এডিশন্যাল ডিজিএফটি বিজয় কুমার, কেন্দ্রীয় সরকারের রাবার বোর্ডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. কে এন রাঘবন, রাজ্য শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব ড. পি কে গোয়েল এবং অধিকর্তা তড়িৎ কান্তি চাকমা। উদ্বোধকের ভাষণে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে সাক্রমে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট গড়ে তোলার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।

এজন্য ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের সাথে রাজ্যের বিগত বছরগুলির তুলনায় আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। পরিসংখ্যান দিয়ে দপ্তরের মন্ত্রী জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে বাংলাদেশের সাথে আমদানি ও রপ্তানি হয়েছে ৩৯০ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা।

২০-২১ অর্থবর্ষে এই পরিমাণ বেড়ে গিয়ে হয়েছে ৭৩৩ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা। অনুরূপভাবে ১৭-১৮ সালে রপ্তানি হয়েছে ৬ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। যা ২০ ২১ সালে এসে দাঁড়ায় ১৬ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকায়। শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী আরও জানান, সাক্রমে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল অর্থাৎ এস ই জেড গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আগরতলা- আখাউড়া রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ খুব সহসাই সম্পন্ন হবে। নিশ্চিন্তপুর সীমান্তে একটি আইসিপি গড়ে তোলার প্রস্তাব রয়েছে। এছাড়া বিলোনীয়া থেকে বাংলাদেশের ফেনী পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের কাছে পেশ করা হয়েছে।

সোনামুড়ার গোমতী নদীতে ভাসমান জেটি গড়ে তোলার মাধ্যমে জলপথে যোগাযোগ স্থাপন সহজ হয়েছে। এমবিবি বিমানবন্দরে নতুন সুসংহত টার্মিনাল বিল্ডিং গড়ে তোলার কাজও প্রায় শেষের পথে। শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী জানিয়েছেন, শুধু ত্রিপুরা থেকে ৫ হাজার ৫৯০ মেট্রিকটন আনারস বহিরাজ্য এবং বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে।

এ থেকে আয় হয়েছে ৭কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা।অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায় প্রতিবেশী বাংলাদেশে বাঁশ ও রাবার জাতীয় পণা সামগ্রী রপ্তানির উপর গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি আগরতলাস্থিত বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি জানান, বাঁশ ও রাবার জাতীয় পণ্য সামগ্রীর প্রসার ঘটাতে বাণিজ্যিক দিক থেকে চিন্তা ভাবনা করতে হবে।

এছাড়া রাবার চাষীদের ইন্স্যুরেন্সের আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখার আহ্বান জানান তিনি। আলোচনা করতে গিয়ে বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনার মহম্মদ জোবায়েদ হোসেন বাংলাদেশের সাথে ত্রিপুরার নিবিড় সম্পর্কের বিষয়টি উত্থাপন করেন।

সাক্রমের স্পেশাল ইকোনমিক জোনের মাধ্যমে আগামীতে ভারত বাংলা দুই দেশ ব্যবসায়িক দিক থেকে ব্যাপক লাভবান হবে বলেও মত ব্যক্ত করেন তিনি। স্বাগত বক্তবো শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব ড. পি কে গোয়েল এই অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ত্রিপুরার বাশ সারা দেশের মধ্যে সমাদৃত। এখানকার বাশ জাত সামগ্রীর কদর রয়েছে সব জায়গায়। বাশ শিল্পের প্রসার ঘটাতে সময়ে সময়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

এই রাজ্যের রাবার শিল্পেরও যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিবেশী বাংলাদেশও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আগামীতে রাজ্যের মানুষ বাশ ও রাবারের মাধ্যমে লাভবান হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

 

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?