স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২১ সেপ্টেম্বর।। প্রাণী পালনের মাধ্যমে খুব কম সময়েই রোজগার পাওয়া যায়। রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করতে ও গ্রামীণ এলাকার মানুষকে আত্মনির্ভর করে তুলতে প্রাণী পালনে আগ্রহী করে তুলতে হবে।
আজ আগরতলা অভয়নগরস্থিত পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্রের নবনির্মিত প্রাণী ঔষধ সংগ্রহশালা ও হিমঘরের দ্বারোদঘাটন করে প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী ভগবান দাস একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, রোজগারের জন্য সরকারি চাকুরীই শেষ কথা নয়। ইচ্ছে থাকলে চাকুরী ছাড়াও প্রাণী পালন সহ বিভিন্ন স্বনির্ভর সরকারি প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করে মানুষ নিজেকে আর্থিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন। তিনি আরও বলেন, প্রাণী পালন একটি সহজ ও সরল ব্যবসা, যার মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে বেশী আয়ের পথ সুগম হয়।
এ বিষয়ে প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী শ্রীদাস রাজ্যের সুকেশ দাস ও দীপু নম: নামে দুই যুবকের সাফল্যের কাহিনী বিস্তৃত বর্ণনা করে বলেন, এই যুবকেরা মাত্র ৬ মাসেই শুকর পালনের মাধ্যমে স্বনির্ভর হয়েছেন। এখন এই যুবকেরা শুরুর পালনের মাধ্যমে প্রতিবছর ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা রোজগার করছেন। প্রাণী পালনে যে কম সময়ে বেশী আয় করা যায় এরা তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তিনি বলেন, এইসব আগ্রহী প্রাণী পালকদের দিকে লক্ষ্য রেখেই সরকার প্রাণী ঔষধ স্টোর, হিমঘর আরও বেশী করে রাজ্যে নির্মাণ করবে। প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী বলেন, কৃষক পরিবারগুলিকেও প্রাণী পালনে উৎসাহিত করতে আরও নতুন পরিকল্পনা আনা হচ্ছে। এই লক্ষ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনা চালু করেছেন।
এই যোজনার মাধ্যমে রাজ্যের প্রায় ৬ লক্ষ কৃষক পরিবার উপকৃত হবেন বলে মন্ত্রী শ্রীদাস মনে করেন। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের দুগ্ধ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে উন্নত প্রজাতির গাভী প্রজননের জন্য মুখ্যমন্ত্রী উন্নত গোধন প্রকল্পও চালু করেছেন।
তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে এইসব দূরদর্শী প্রকল্পের উদ্ভাবনার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং এই প্রকল্পগুলির সুবিধা প্রতিটি কৃষক পরিবারে যাতে খুব সহজে পৌঁছে যায় সেই দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের প্রতিও আহ্বান জানান।
তিনি মনে করেন এই যোজনা ও প্রকল্পগুলি গ্রামীণ গরীব কৃষিজীবি পরিবারগুলির জন্য এক নবযুগের সূচনা করেছে। এর মধ্য দিয়ে গ্রামীণ মানুষের আর্থসামাজিক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে। আগামী দিনে তাদের জন্য আরও নতুন নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হবে। প্রাণী পালকদের সহায়ক এরকম সেন্টার রাজ্যে এখন ৪টি আছে, আরও নতুন স্টোর নির্মাণ করা হবে।
প্রাণী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংখ্যাও আরও বাড়ানো হবে। অনুষ্ঠানের সভাপতি পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা সরকার (দেব) অনুষ্ঠানে বলেন, রাজ্যের গরীব অংশের মানুষকে আত্মনির্ভর করাই হচ্ছে ত্রিপুরা সরকারের মূল লক্ষ্য।
প্রাণীজ সম্পদ খুব সহজেই মানুষকে আত্মনির্ভর হতে সাহায্য করতে পারে বলে তিনি মনে করেন। তিনি প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন প্রাণী পালক বা কৃষকদের দুগ্ধজাতদ্রব্য, ঘি, মাখন, মিষ্টি, কম্পোষ্ট সার ইত্যাদি তৈরীর প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. কে শশীকুমার বিশেষ অতিথির ভাষণে বলেন,
পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার প্রাণী পালকদের চাহিদা ও সহায়তার দিকে লক্ষ্য রেখেই এখানে এই নতুন প্রাণী ঔষধ স্টোর ও কোল্ড স্টোর নির্মাণ করা হয়েছে।
এই স্টোর ২টির নির্মাণ কর্মসূচির জন্য রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন দপ্তরের পশ্চিম জেলা উপঅধিকর্তা ড.সুব্রত শুরু দাস।