Visited: আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে ডোনার বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বি এল ভার্মা

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৬ সেপ্টেম্বর।। ডোনার বিষয়ক ও কেন্দ্রীয় সমবায় প্রতিমন্ত্রী বি এল ভার্মা আজ আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্পের কাজ ঘুরে দেখেন। এই প্রকল্প ঘুরে দেখার সময় তাঁর সাথে ছিলেন পরিবহণ দপ্তরের প্রধান সচিব শ্রীরাম তরণীকান্তি ও পরিকল্পনা দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়।

প্রকল্পের সাইটে তাদের স্বাগত জানান প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ইরকন ইন্টারন্যাশনালের সিজিএম ওয়ার্কস বিনোদ কুমার গুপ্তা, জিএম রমন শিংলা ও অন্যান্য বরিষ্ঠ আধিকারিকগণ। সফরকালে ডোনার বিষয়ক মন্ত্রী প্রকল্পের বিস্তারিত পর্যালোচনা করেন।

প্রকল্পের কাজ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানাতে গিয়ে সিজিএম ওয়ার্কস শ্রী গুপ্তা বলেন, বর্তমানে আগরতলা থেকে কলকাতার রেললাইনের দূরত্ব ১,৬০০ কিমি এবং সেই দূরত্ব পার করতে সময় লাগে প্রায় ৩৮ ঘণ্টা। এই রেললাইন শেষ হলে আগরতলা-কলকাতার দূরত্ব কমে দাঁড়াবে প্রায় ৫০০ কিমি আর সময় লাগবে প্রায় ১৬ ঘন্টা।

অর্থাৎ ১,১০০ কিমি দূরত্ব কমে যাবে আর ২২ ঘণ্টা সময় বাঁচবে। আলোচনাকালে পরিবহণ দপ্তরের প্রধান সচিব শ্রীরাম তরণীকান্তি জানান, স্থল পরিবেষ্টিত ত্রিপুরার কোনও বন্দরকেন্দ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পণ্য সামগ্রী সরবরাহের জন্য সড়ক পথে পরিবহণই একমাত্র ভরসা। এই প্রকল্পটি শেষ হলে ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের যোগাযোগ গড়ে উঠবে এবং যার ফলে পণ্য পরিবহণে খরচ কমবে।

ত্রিপুরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্যও গেটওয়েতে পরিণত হবে। তিনি আরও বলেন, নতুন এই রেললাইনটি আগরতলা রেলস্টেশন থেকে শুরু হয়ে গঙ্গাসাগর স্টেশনে বাংলাদেশ রেল নেটওয়ার্কের সাথে মিশবে। ভারতের দিকে এই রেললাইনের দৈর্ঘ্য হবে ৫.৪৬ কিমি এবং বাংলাদেশের দিকে হবে ৬.৭৮ কিমি৷

অন্যদিকে, ইরকন ইন্টারন্যাশনালের জিএম রমন সিংলা প্রকল্পের টেকনিক্যাল দিকগুলি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, প্রকল্পটি দুই ধাপে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রথম ধাপে হচ্ছে নিশ্চিন্তপুর রেল ইয়ার্ড নির্মাণ এবং দ্বিতীয় ধাপে আগরতাল স্টেশন ইয়ার্ডের সাথে নিশ্চিন্তপুর ইয়ার্ডের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হবে।

এএএনআরএলপি প্রকল্পে প্রথম ফেজ এর কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। কিন্তু এটি চালু করা যাবে একমাত্র বাংলাদেশের প্রান্তের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে কেননা বাংলাদেশের ট্র্যাক হচ্ছে মিটার গেজ আর ভারতীয় রেলের কাছে মিটার গেজ রোলিং স্টক নেই। নিশ্চিন্তপুর স্টেশনটি একটি মডেল বিল্ডিং হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে যেখানে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমের সুবিধা থাকবে।

ইরকনের জি এম আরও জানান, দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহণের সময় বাংলাদেশ থেকে লাইন নং ৩ এবং ৪-এ (মিটার গেজ) পণা গ্রহণ করা হবে। তারপর বাকি রাস্তা পরিবহণের জন্য নিশ্চিন্তপুর ইয়ার্ডে পণ্য সামগ্ৰী লাইন নং ৫ এবং ৬ নং (ব্রড গেজ) স্থানান্তরিত করা হবে।

নিশ্চিন্তপুর ইয়ার্ডে মাল পরিবহণ ও যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ইরকন সড়ক সংযোগ তৈরি করছে। বাংলাদেশের দিকে এএএনআরএলপি প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানানো হয়, বাংলাদেশের দিকে এই কাজের অগ্রগতি খুব একটা উল্লেখযোগ্য নয়।

মাত্র ৫০ শতাংশ কাজ হয়েছে। দ্বিতীয় ফেজ সম্পর্কে ইরকন জিএম জানান, আগরতলা রেল স্টেশনের সাথে নিশ্চিস্তপুর ইয়ার্ডকে ভায়্যাডাক্টের মাধ্যমে যুক্ত করতে ভায়াড্যাক্ট সাব স্ট্রাকচারের কাজ প্রায় শেষের পথে এবং পাইল ক্যাপ, পায়ার ও পায়ার ক্যাপ নির্মাণ ইত্যাদি অন্যান্য কাজও সময়মতো এগিয়ে চলেছে।

সবকিছু শুনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং রেলওয়ে ও ইরকনের আধিকারিকদের সংশোধিত সময়সীমা অর্থাৎ জুন, ২০২২-র মধ্যে ভারতের অংশের কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেন। এই প্রকল্পের কাজের জন্য অর্থের কোনও সমস্যা হবে না বলেও আশ্বাস দেন ডোনার বিষয়ক মন্ত্রী।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?