Memories: ৩ বছর আগের মুম্বাইয়ের ভয়াবহ সেই সন্ত্রাসবাদী হামলার স্মৃতি ফিরে এলো যেন আবার

অনলাইন ডেস্ক, ৩ সেপ্টেম্বর।। ১৩ বছর আগের মুম্বাইয়ের ভয়াবহ সেই সন্ত্রাসবাদী হামলার স্মৃতি ফিরে এলো যেন আবার। সেবার জলপথ ব্যবহার করেই করাচি থেকে মুম্বাইয়ে ঢুকে তিনদিন ধরে ৮টি জায়গাতে হামলা চালিয়েছিল সন্ত্রাসবাদীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মুম্বাইয়ের ভাসাই পশ্চিমের ভুইগাঁও সৈকতে একটি অপরিচিত ট্রলার দেখা যায়। স্থানীয়রাই প্রথমে বিষয়টি পুলিশকে জানায় এবং এরপর মুম্বাইয়ের ভাসাই পশ্চিম সমুদ্র সৈকত কতৃপক্ষ পুরো বিষয়টি কোস্টগার্ড কর্মকর্তাদের জানায়।

নৌকাটি খুঁজে বের করতে একটি তদন্ত শুরু করা হয়েছে। নৌকাটি একটি মিনি বার্জ টাইপের জাহাজ ছিল। মুম্বাইয়ের বুইলগাঁও-কলম্ব এলাকা থেকে প্রায় ১০ নটিক্যাল মাইল দূরে দেখা গিয়েছে জাহাজটিকে। এতে একটি লাল পতাকা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন এক স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা। যে জায়গাতে নৌকাটি দেখা গিয়েছে তা চিন্তা বাড়াচ্ছে ভাসাই পশ্চিম সমুদ্র সৈকত কতৃপক্ষ সহ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের। কারণ সাধারণত মাছ ধরার নৌকাগুলি এই পাথুরে জলপথে যায় না। স্থানীয় পুলিশ মারফৎ জানা গিয়েছে একটি ছোট নজরদারি বিমানও পাঠানো হয়েছিল কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে নৌকাটির খোঁজ পাওয়া যায়নি!

নৌকায় দুজনকে দেখা গিয়েছে বলে স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। কোস্টগার্ডের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ভূইগাঁও সমুদ্র সৈকতের উপকূলরক্ষীরা আকাশপথে নজরদারি চালাতে গিয়ে একটি সন্দেহজনক জাহাজ দেখতে পান। কিন্তু প্রথমে জাহাজে কোনও মানুষের উপস্থিতি দেখতে পাননি তারা। আকাশ থেকে নজরদারি চালানোর সময় নীচে সমুদ্রে নৌকার নাম এবং এর আইএমও নম্বরটি উপর থেকে সুস্পষ্ট ছিল না। এরপরই কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা তদন্তে সহায়তা করার জন্য ভাসাইয়ের স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে চুপচাপ ছিলেন। তবে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, তারা আজ নৌকাটি খুঁজে পেতে একটি ড্রোন তদন্ত চালাবে এবং নৌকার মালিককে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে।

২০০৮ সালে ২৬ নভেম্বর লস্কর-ই তৈয়বা-র সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। গভীর সাগর পর্যন্ত একই জাহাজে ছিল পুরো দুস্কৃতি দলটি। এরপর তারা ‘কুবের’ নামের একটি ট্রলার ছিনতাই করে ও চারজন মৎসজীবীকে মেরে নাবিককে প্রাণের ভয় দেখিয়ে প্রায় ৩৮ ঘণ্টা ভারতীয় জলবাহিনীর নজর এড়িয়ে মুম্বাইয়ের সীমান্তে ঢুকে পড়ে। এরপর নাবিককে হত্যা করে প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিষ্ফোরক নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল জঙ্গীরা।

২০০৮ সালের ২৬ থেকে ২৯ নভেম্বর, এই তিনদিন দক্ষিণ মুম্বাইয়ের, ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস, ওবেরয়, তাজ মহল প্যালেস, নরিম্যান হাইস ইহুদি কমিউনিটি সেন্টার, মেট্রো অ্যাডল্যাবস, টাইমস অফ ইন্ডিয়া ভবন ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের পেছনের একটি গলিতে বিষ্ফোরণ ও নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। এছাড়া মুম্বাইয়ের বন্দর এলাকার মাজাগাঁও ও ভিলে পার্লের একটি ট্যাক্সির মধ্যেও বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল আজমল কাসভ ব্রিগেড।স্বাভাবিক ভাবেই পুরনো স্মৃতি উসকে দিয়ে মুম্বাইয়ের ভাসইয়ে দেখা যাওয়া এই অচেন ট্রলার, চাপে রাখছে মুম্বাই পুলিশ ও কোস্টগার্ড কর্মকর্তাদের।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?