আগরতলা, ২৯ আগস্ট।। বাল্যবিবাহ মেয়েদের স্বাস্থ্য ও জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ। উন্নয়নশীল বিশ্বে গর্ভধারণ ও সন্তানধারণের জটিলতা অল্প বয়সে নারী মৃত্যুর অন্যতম কারণ। ১৫-১৯ বছর বয়সী গর্ভবতী নারীদের মাতৃমৃত্যুর সম্ভাবনা ২০ বছর বয়সী গর্ভবতী নারীদের তুলনায় দ্বিগুণ।
আর ১৫ বছরের কম বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে মাতৃমৃত্যুর সম্ভাবনা ৫-৭ গুন বেশি। যেসব নারী ১৫ বছরের পূর্বে সন্তান জন্মদান করে তাদের ফিস্টুলা বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৮৮%। যা বিভিন্ন সংক্রমনের অন্যতম কারণ। ২০ বছর বয়সী বিবাহিত নারীদের যৌন সংক্রমিত রোগের সম্ভাবনা বেশি
বাল্যবিবাহ শুধু মাত্র মায়ের স্বাস্থ্যই না বরং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ও হুমকি স্বরূপ। ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের অপরিণত সন্তান জন্মদান বা কম ওজনের সন্তান জন্মদানের সম্ভাবনা ৩৫-৫৫%। তাছাড়াও শিশু মৃত্যুর হার ৬০% যখন মায়ের বয়স ১৮ বছরের নিচে। যেসব নারী কম বয়সে শিশুর জন্ম দেয় ঐসব শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয় ও শিশু অপুষ্টিতে ভোগার সম্ভাবনা বেশি। বাল্যবিবাহের প্রাদুর্ভাবের কারণে জনসংখ্যার হার বৃদ্ধি পায়।
বাল্যবিবাহ মেয়েদের শিক্ষা জীবনের ইতি ঘটায়, সাধারণত অনুন্নত দেশসমূহে। একইভাবে নিরক্ষর মেয়েদের বাল্যবিবাহের হার বেশি। যেসব মেয়েদের শুধু প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে তাদের ১৮ বছরের নিচে বিয়ের সম্ভাবনা মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রাপ্ত মেয়েদের তুলনায় দ্বিগুণ। এবং একেবারে নিরক্ষর মেয়েদের ১৮ বছরের নিচে বিয়ের সম্ভাবনা মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রাপ্ত মেয়েদের তুলনায় তিনগুন বেশি।
পারিবারিক দায়িত্ব পালন ও সন্তান লালন-পালনের জন্য বিয়ের পর বেশিরভাগ মেয়ের শিক্ষা জীবন ব্যাহত হয়। শিক্ষা ছাড়া মেয়ে এবং নারীদের উপার্জনের সামান্য পথ -ই খোলা থাকে। এ কারণে নারীদের ক্রমাগত দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করতে হয়, বিশেষত যদি তাদের স্বামী মারা যায় বা তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
যেহেতু বাল্যবিবাহের ফলে মেয়েরা স্বামীর চেয়ে তুলনামূলক কম বয়সী হয়, তাই তারা কম বয়সে বিধবা হয় এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটে পড়ে। তাই বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।