অনলাইন ডেস্ক, ২৫ আগস্ট।। নিউ ইয়র্কের দায়িত্ব নিলেন প্রথম নারী গভর্নর ক্যাথি হোচুল। মঙ্গলবার মধ্যরাতে তিনি শপথ গ্রহণ করেছেন। বুধবার সকালে শপথ হওয়ার কথা থাকলেও আইনগত কারণে মঙ্গলবার মধ্যরাতেই ক্ষমতা গ্রহণ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী গভর্নর হিসেবে নিউইয়র্কের দায়িত্ব নিলেন ক্যাথি। তিনি নিউ ইয়র্কের ৫৭তম গভর্নর।
দায়িত্ব নেওয়ার সময় তিনি নিউ ইয়র্কের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বদল আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যাতে নিউ ইয়র্কের বাসিন্দারা “পুনরায় তাদের সরকারকে বিশ্বাস করতে পারে”। তিনি বলেন, “আমি চাই জনগণ পুনরায় তাদের সরকারকে বিশ্বাস করুক”।
এর আগের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো যৌন হয়রানির অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন। সোমবার গভীর রাতে নিউইয়র্ক স্টেট এসেম্বলি ও সিনেট নেতাদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন অ্যান্ড্রু কুমো।
তবে যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে কুমো বলেন, আইনি প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত না করার জন্যই তার এই পদত্যাগ।
গত বছর নিউইয়র্কের অন্তত ১১ জন নারী কুমোর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের তদন্তেও প্রাথমিকভাবে অভিযোগের প্রমাণ মেলে।
যৌন হয়রানির দায়ে ১০ আগস্ট অ্যান্ড্রু কুমো পদত্যাগ করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্যরাও তাকে সরে দাঁড়াতে চাপ দিয়ে আসছিলেন। এছাড়া আইনগত চাপও ছিল, যেহেতু তদন্তে তার বিরুদ্ধে এগারো নারীকে যৌন হয়রানির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ভবিষ্যতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বিবেচিত কুমোর আকস্মিক পতন সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ বৃহৎ জনবহুল রাজ্য নিউইয়র্কের গভর্নর হিসেবে ২০১১ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ডেমোক্র্যাটদলীয় কুমো।
এর আগে পাঁচ মাসের স্বাধীন তদন্তের পর প্রতিবেদন প্রকাশ করেন নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিটিয়া জেমস। এতে বলা হয়, তিনি তার আচরণের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাজ্যের আইন লঙ্ঘন করেছেন।
তবে কোনো ধরনের ভুল করার কথা অস্বীকার করেছেন কুমো। তিনি বলেন, নারীদের প্রতি অন্যায় আচরণের পুরো দায় আমি গ্রহণ করছি। মমতা কিংবা রসিকতার ছলে অসচেতনভাবে এমন অন্যায় হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, দায়িত্বে থেকে অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়লে রাজ্য সরকার অচল হয়ে পড়বে। যখন করোনাভাইরাস বড় ধরনের হুমকি তৈরি করেছে, তখন এই অচলাবস্থায় করদাতাদের কোটি কোটি ডলার ক্ষতি হবে।
আমি মনে করি, পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে, পদত্যাগ করাই আমার জন্য ভালো পথ। এতে সরকারের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলতে পারবে। আর এ কারণেই আমি পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।
তার বিরুদ্ধে ১৬৮ পাতার তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তিনি বর্তমান ও সাবেক নারী কর্মীদের শরীরে হাতড়েছেন, চুমো দিয়েছেন এবং যৌন ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য করেছেন।
এছাড়া যৌন অসদাচরণের অভিযোগ আনা এক নারীর বিরুদ্ধে তিনি প্রতিশোধও নিয়েছেন। তবে সোমবার কুমো তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।