স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৩ আগস্ট।। স্বামী বিবেকানন্দের নির্দেশিত পথে মানব সেবায় সমাজের সকলস্তরের নাগরিকদের সর্বাঙ্গীন কল্যাণে কাজ করছে সরকার। উন্নয়নের নিরিখে প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই সফলতা মিলছে রাজ্যে।
আজ উদয়পুরের রাজষী কলাক্ষেত্রে বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চ আয়োজিত যুব সম্মেলনে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিবেকানন্দের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নিয়ম, নীতি ও স্বচ্ছ নিয়তকে প্রাধান্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত বিকাশের পথে কাজ করছে সরকার। কোন ধরণের রঙ বিচারের ঊর্ধ্বে উঠে সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত আর্থসামাজিক মান উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন রাজ্যের নাগরিকগণ।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কিছু নিতে আসিনি, রাজ্যবাসীর সার্বিক কল্যাণের মাধ্যমে কিছু দেয়াই আমার মূল লক্ষ্য। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সাফল্যের দিক দিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য ত্রিপুরা এখন সমগ্র দেশের কাছে পরিচিতি লাভ করছে। মুখ্যমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের সুযোগ সমস্ত অংশের নাগরিকদের কাছে পৌঁছে দিতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কোভিড নিয়ন্ত্রণে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও গোটা দেশবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে বিনামূল্যে টিকাকরণের ব্যবস্থা করেছেন। রাজ্যের সচেতন নাগরিকগণের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজ্যে ইতিমধ্যেই ৯৩ শতাংশ টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে।
কোভিড টিকাকরণে রাজ্য শীর্ষস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, নাগরিক স্বাধীনতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজের সকল অংশের নাগরিকদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে সামাজিক পট পরিবর্তনের দৃষ্টিভঙ্গীকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। রাজ্যে এখন অনেকের মধ্যেই স্বনির্ভর হয়ে উঠার মানসিকতা গড়ে উঠেছে।
কাঠাল, আগর, ক্যুইন আনারস সহ সম্ভাবনাময় নানান দিক ত্রিপুরাকে আত্মত্মনির্ভরতার পথ দেখাচ্ছে। পাকা ঘর, সুলভ শৌচাগার, রান্নার গ্যাস, বিদ্যুৎ, কৃষক কল্যাণ, উন্নত সড়ক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয়জল বিশেষ করে প্রাথমিক ক্ষেত্রের উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন রাজ্যের মানুষ।
বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানে ডিজিটালাইজেশানের ফলে কাজে এসেছে স্বচ্ছতা সবার জন্য পাকাবাড়ি নির্মাণের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার তারই অঙ্গ হিসাবে ১ লক্ষ ৮০ হাজার ঘর পেতে চলেছে ত্রিপুরার প্রকৃত সুবিধাভোগীরা।
https://www.facebook.com/bjpbiplab/videos/369125274920270/
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক সংকীর্ণতার ঊর্ধে উঠে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের সহায়তা করাই সরকারের লক্ষ্য। বিগত দিনের তুলনায় বর্তমানে অধিক মাত্রায় এই প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন রাজ্যের নাগরিকরা। এদিন উদয়পুর মহকুমা প্রেস ক্লাবের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পর্যটন, পরিবহণ ও কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় বলেন, মানুষকে জানতে হলে কর্মব্যস্ততার মধ্যেও অবসর সময়ে আগে নিজেকে জানতে হবে।
নিজেকে প্রশ্ন করলেই সঠিক উত্তর পাওয়া যাবে যে রাজ্য কোন দিশায় অগ্রসর হচ্ছে। পর্যটন মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার সমাজের সকল স্তরের নাগরিকদের উন্নয়নে কাজ করছে।
২০২২ এর মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার তাতে আরও গতি সঞ্চার করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। বর্গাদার কৃষকদের কথা ভেবে ঋণের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। যাতে প্রকৃত কৃষকদের কাছে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যায়।
কৃষকদের রোজগার বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিশন মুডে কাজ করছে সরকার। বর্তমানে রাজ্যের উৎপাদিত ফল ও ফসল জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে। বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের সহায়তা সকল অংশের নাগরিকদের কাছে পৌঁছে দিতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বিপ্লব কুমার ঘোষ, বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চের সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মজুমদার, মঞ্চের অন্যতম সদস্য সঞ্জয় মিশ্র। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কপিল মিশ্র ও তজিন্দর পাল সিং বথা।