অনলাইন ডেস্ক, ৩১ জুলাই।। উত্তর ইথিওপিয়ার যুদ্ধ বিধ্বস্ত টাইগ্রে প্রদেশে এক লাখ শিশু ১২ মাসের মধ্যে প্রাণঘাতী অপুষ্টিতে ভুগতে যাচ্ছে। যা এই অঞ্চলের গড় সংখ্যার তুলনায় দশগুণ বেশি।
শুক্রবার জেনেভায় জাতিসংঘের শিশু তহবিল এ সতর্ক বার্তা দেয়।
ইউনিসেফের মুখপাত্র ম্যারিক্সি মার্কাডো জানান, প্রতি দুই গর্ভবর্তী ও সন্তানকে স্তন্যপান করান এমন নারী অপুষ্টিতে ভুগছেন।
আরও বলেন, এই অঞ্চলে শিশুদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সংস্থাটির সবচেয়ে খারাপ আশঙ্কাই প্রমাণিত হয়েছে।
মার্কাডো বলেন, খাদ্য, পানি, স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি এবং পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থায় ব্যাপক ও পদ্ধতিগত ক্ষতি এই পুষ্টিহীনতার সংকট বাড়িয়ে তুলেছে। এই ব্যবস্থাগুলো শিশু এবং তাদের পরিবারের বেঁচে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এই বিপর্যয় থেকে মুক্তি পেতে টাইগ্রে অঞ্চলে ব্যাপক মানবিক সহায়তার প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মার্কাডো বলেন, টাইগ্রে ও আশপাশের অঞ্চলজুড়ে অবাধ প্রবেশাধিকার প্রয়োজন, যাতে করে শিশু ও নারীদের জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা প্রদান করা যায়।
এই মুহূর্তে আমাদের টাইগ্রের গুদামে রেডি টু ইট অর্থাৎ তাৎক্ষণিকভাবে খাওয়া যায় এমন পুষ্টিকর খাদ্যের জোগান রয়েছে মাত্র ৬ হাজার ৯০০ কার্টনের। যা শুধু ৬,৯০০ শিশুর মারাত্মক অপুষ্টিজনিত চিকিৎসা করার জন্য যথেষ্ট।
সম্প্রতি জাতিসংঘ জানায়, টাইগ্রে অঞ্চলে ৪ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। যাদের ৯০ শতাংশের জরুরি সাহায্য প্রয়োজন।
তবে এক বিবৃতিতে বৃহস্পতিবার ইথিওপিয়ার সরকার টাইগ্রের বিদ্রোহী পক্ষকে সাহায্য আটকে দেওয়ার জন্য দায়ী করে।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবি আহমেদ ২০১৮ সালে ক্ষমতা আসার পর ইথিওপিয়ার রাজনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটতে থাকে।
প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দুই দশক ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটে তারই হাত ধরে। এই কারণে ক্ষমতায় আসার মাত্র এক বছরের মাথায় নোবেল শান্তি পুরস্কার পান তিনি।
প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারলেও নিজ দেশের স্বাধীনতাকামী অঞ্চল টাইগ্রেতে তিনি শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হন।
উল্টো টাইগ্রের স্বাধীনতাকামীদের দমনে গত নভেম্বরে সেখানে তিনি সেনাবাহিনী পাঠান। এরপর থেকেই শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘাত। এ সংঘাতের প্রধান ভুক্তভোগী হয়েছে সেখানকার সাধারণ মানুষ।