National Education Policy: দেশের যুব সমাজ যে দিশায় এগুতে চায় নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি তাদের সেই পথ দেখাবে, বললেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৯ জুলাই।। আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন দেশ গঠনে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি বড় ভূমিকা পালন করবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিকে আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। দেশের যুব সমাজ যে দিশায় এগুতে চায় নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি তাদের সেই পথ দেখাবে। আজ নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একথা বলেন।

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আজকের এই ভিডিও কনফারেন্সিং-এ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীগণ, শিক্ষামন্ত্রীগণ এবং অধ্যাপক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ সহ ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। রাজ্যের পক্ষে ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ। প্রধানমন্ত্রী নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সমস্ত দেশবাসী বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি রূপায়ণে গত এক বছর ধরে শিক্ষকগণ, অধ্যাপকগণ, নীতি নির্ধারকগণ অনেক পরিশ্রম করছেন। দেশে করোনাকালীন সময়েও দেশের নাগরিক, শিক্ষক এবং রাজ্যগুলি থেকে পরামর্শ নিয়েই টাস্কফোর্স গঠন করে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে।

গত একবছরে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিকে ভিত্তি করে অনেক বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি এমন সময় নেওয়া হয়েছে যখন দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে ‘আজাদি কা অমুত’ উৎসব পালন করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির অন্তর্গত যে সমস্ত কর্মসূচি আজ চালু করা হয়েছে তা নতুন ভারত নির্মাণে বড় ভূমিকা গ্রহণ করবে। ভবিষ্যতে দেশকে আমরা কত উচ্চতায় নিয়ে যাব তা নির্ভর করবে যুব সমাজকে বর্তমানে আমরা কি ধরণের শিক্ষা দিচ্ছি তার উপর।

দেশের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি আধুনিক দেশ গঠনের মহাযজ্ঞে একটি অন্যতম ক্ষেত্র হবে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি এত বড় মিশন যে সেটা আমাদের বার বার স্মরণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশর বর্তমান যুব সমাজকে তাদের অকাঙ্খা, তাদের স্বপ্নের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে দেখা যাবে যে প্রত্যেকের মধ্যেই নতুন শক্তি এবং নতুন কিছু করার মানসিকতা রয়েছে।

দেশের যুব সমাজ পুরানো ধ্যান ধারনা পরিবর্তনেও সম্পূর্ণভাবে তৈরি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরাট চ্যালেঞ্জ আসায় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনার ধরণই পাল্টে গিয়েছিলো। অনলাইনে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা প্রদান করা হয়েছিলো। শিক্ষার্থীরা দ্রুত গতিতে পড়াশুনার এই ধরণকে আয়ত্ব করেছিল। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এই বিষয়ে যথেষ্ঠ প্রেরণা দিয়েছিলো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান ২১ শতাব্দির যুব সমাজ নিজের মতো করে নতুন দুনিয়া বানাতে চায়। এরজন্য তাদের সঠিক এক্সপোজারের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি বড় সহায়কের ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ছোট ছোট গ্রাম ও দূর দূরান্ত এলাকা থেকে বেড়িয়ে আসা গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা টোকিও অলিম্পিকে দেশের পতাকা উচুতে তুলে ধরছেন এবং ভারতকে এক নতুন পরিচয় দিচ্ছেন।

এরকম বহু যুবক-যুবতী কলা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ক্ষেত্রে, মেশিন লার্নিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য এগিয়ে চলছে। এই যুব সমাজই দেশে ডিজিটাল ইন্ডিয়াকে নতুন গতি দিচ্ছে। দেশের এই যুব সমাজকে যখন তাদের স্বপ্নের মতো পরিবেশ মিলবে তখন তাদের শক্তিও বেড়ে যাবে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি যুব সমাজকে বিশ্বাস যোগাবে যে দেশ পুরোপুরি তাদের সাথে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রাম-শহরের সবাই যাতে ডিজিটাল লার্নিং-এর সাথে যুক্ত হয় সেই ব্যবস্থাও নতুন শিক্ষানীতিতে রয়েছে। তিনি বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিকে যেকোনও ধরণের চাপ থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে একজন ছাত্র কত সময় এবং কতটুকু পড়াশুনা করবে তা শুধু বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক করবে না, এই সিদ্ধান্তে ছাত্রছাত্রীদেরও মতামত থাকবে।

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির অন্তর্গত ন্যাশনাল ডিজিটাল এডুকেশন আর্কিটেকচার এবং ন্যাশনাল এডুকেশন টেকনোলজি ফোরাম পদ্ধতি দেশের ডিজিটাল এবং প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের শিক্ষার্থীদের উন্নততর ও ভালো শিক্ষা গ্রহণের জন্য আগে বিদেশে যেতে দেখা যেত। কিন্তু এখন দেশবাসী দেখবে যে উন্নত ও আধুনিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য বিদেশের ছাত্রছাত্রীরাও ভারতে আসবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিকস্তরে শিক্ষা গ্রহণে মাতৃভাষায় বা স্থানীয় আঞ্চলিক ভাষার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, দেশে ৩ লক্ষ্যের উপর এমন বাচ্চা রয়েছে যাদের শিক্ষার জন্য সংকেতিক ভাষার প্রয়োজন।

তাদের জন্য নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে ইন্ডিয়ান সায়েন্স ল্যাঙ্গুয়েজ নামক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি শুরু থেকে কার্যকর করার পরও শিক্ষকদের আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণে দেশের সমস্ত শিক্ষক ও অধ্যাপকদের অংশগ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানান।

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী অনলাইনের মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষানীতির বিভিন্ন কর্মসূচি যেমন, ইন্ডিয়ান সায়েন্স ল্যাঙ্গুয়েজ, দীক্ষা, নিষ্ঠা ২.০ সফল, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, অ্যাকাডেমিক ব্যাঙ্ক অব ক্রেডিট, ন্যাশনাল ডিজিটাল এডুকেশন আর্কিটেকচার, ন্যাশনাল এডুকেশন টেকনোলজি ফোরাম ইত্যাদি কর্মসূচিগুলি চালু করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ রাখেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?