স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৯ জুলাই।।আইপ্যাক টিমের সদস্যদের আইনের বেড়াজালে ফাঁসিয়ে হেনস্থা করার যে অপকৌশল নিয়েছিল শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার তা ব্যর্থ হয়ে গেলো আদালতে৷ এদিন সদর মহকুমার অতিরিক্ত সি জে এম কোর্ট থেকে জামিন পেলেন আইপ্যাক টিমের সদস্যরা৷
এই টিমের ২৩ সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছিলেন সদর মহকুমা শাসক৷ কোভিড বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে আইপ্যাক সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে পূর্ব থানায় অভিযোগ করেছিলেন সদর মহকুমা শাসক অসীম সাহা৷
অভিযোগমূলে পুলিশ আইপ্যাক টিমের সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘ত্রিপুরা এপিডেমিক ডিজিজ, কোভিড-১৯ রেগুলেশনস-২০২০’ মোতাবেক মামলা নথিভুক্ত করে এবং ১ আগস্ট টিমের ২৩ জনকে থানায় হাজির থাকার জন্য নোটিশ দেয়৷ মূলতঃ সদর মহকুমা শাসকের অভিযোগমূলে পুলিশের নেওয়া মামলার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত আইপ্যাক সদস্যরা নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন৷
অভিযুক্ত আইপ্যাক টিম সদস্যদের তরফে রাজ্যের বরিষ্ঠ আইনজীবী পীযূষ কান্তি বিশ্বাস এই মামলার যৌক্তিকতা নিয়ে আদালতে প্রশ্ণ তোলেন৷ বহিঃরাজ্য থেকে আগমনকারী কিংবা প্রস্থানকারীদের যাতায়াতে রাজ্য সরকারের কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের যেহেতু কোন নিষেধাজ্ঞা নেই তাই এই মামলায় কোভিড বিধি লঙ্ঘনের কোন প্রশ্ণই উঠে না৷
তাছাড়া এই মামলায় অভিযুক্তরা কোভিড বিধি লঙ্ঘন করেছে এর কোন তথ্য প্রমাণ কিংবা নির্দিষ্ট অভিযোগ পর্যন্ত নেই৷ অযথা মামলায় ফাঁসিয়ে তার মক্কেলদের প্রথমে পুলিশ দিয়ে নজরবন্দি এবং হয়রানির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বিবাদি পক্ষের আইনজীবী দাবি করেন৷
সর্বোপরি আইপ্যাক সদস্যরা বহিঃরাজ্য থেকে রাজ্যে প্রবেশের সময়ে একাধিক জায়গায় সরকারি নিয়ম মেনে চেকিং সেরে এরপর রাজ্যে এসেছে৷ সুতরাং, তাদের বিরুদ্ধে কোভিড বিধি লঙ্ঘনের প্রশ্ণই উঠে না এবং এই মামলা গুরুত্বহীন দাবি করে অভিযুক্তদের জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী বিশ্বাস৷
তবে প্রসিকিউশনের আইনজীবী অভিযুক্তদের জামিনের বিপক্ষে সওয়ালের পাশাপাশি মামলার তদন্তস্বার্থে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের ডাকে যাতে অভিযুক্তরা হাজিরা দিতে বাধ্য থাকেন আদালতের নির্দেশে তার উপর গুরুত্বারোপ করেন৷
তবে উভয় পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর পশ্চিম জেলার অতিরিক্ত সিজেএম জামিন যোগ্য ধারায় নথিভুক্ত মামলায় অভিযুক্তদের জামিন না মঞ্জুর করার কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পাননি৷ ফলে আইপ্যাক টিমের সব সদস্যদের জামিন মঞ্জুর করেন৷
শুধু জামিন মঞ্জুরই নয়, প্রসিকিউশনের বক্তব্য মোতাবেক মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের সামনে অভিযুক্তদের নিয়মিত হাজিরার যৌক্তিকতা নেই বলে জানিয়ে দেন৷ তবে মামলার তদন্তস্বার্থে পুলিশের সঙ্গে অভিযুক্তদের সহযোগিতার পক্ষে বিচারক অভিমত প্রকাশ করেন৷
পশ্চিম জেলার অতিরিক্ত সিজেএম কোর্টের এই নির্দেশের পর রাজ্য সরকার প্রশাসনকে দিয়ে আইপ্যাক সদস্যদের বিরুদ্ধে জারিজুরি করে যে চক্রান্তের জাল বুনেছিল তা কার্যত ব্যর্থ হয়ে গেলো বলে দাবি করেন রাজ্যের বরিষ্ঠ আইনজীবী পি কে বিশ্বাস৷
আইনের লোক হয়েও সদর মহকুমা শাসক ও পুলিশের বে-আইনি কাজকর্মের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে কি পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেই দিকটিও ভেবে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।