অনলাইন ডেস্ক, ২৯ জুলাই।। আফগানিস্তানে ২০ বছরের যুদ্ধে আমেরিকার লাভ বলে কিছুই হয়নি। বরং মানবাধিকার রক্ষায়, দেশটির নাগরিকদের সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে ২০ বছর আগে ওয়াশিংটন যে যুদ্ধ শুরু করেছিল তাতে কোটি কোটি ডলারের অপচয় হয়েছে। অজস্র মানুষ মারা গেছে এবং আফগানিস্তানের অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। দেশটিতে আমেরিকার তালগোল পাকানো নিয়ে মন্তব্য করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বলেছেন, আফগান পরিস্থিতি সমাধানে আমেরিকা ঠিকমতো কাজ করতে পারেনি।
একবার তারা সামরিক সমাধানের পথে হাঁটতে চায়, আবার তারা রাজনৈতিক সমাধানের পথে হাঁটতে চায়। কিন্তু সময়ের কাজ সময়ে করতে না পারায় তারা জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেছে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আফগানিস্তানে এসে আমেরিকা প্রথমে সামরিক পন্থায় তাদের সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজে। কিন্তু তারা তাতে করুণভাবে ব্যর্থ হয়। সে সময় তাদের হাতে রাজনৈতিক সমাধানের পথ ছিল।
তবে তারা সেদিকে মনোযোগ দেয়নি। পরে তারা এমন সময়ে এসে তালিবানের সঙ্গে রাজনৈতিক সমাধানের চেষ্টা করে, যখন তাদের হাতে সে সক্ষমতা ছিল না। ফলে সেটাতেও তারা ব্যর্থ হয়। সব মিলিয়ে আফগানিস্তানে তারা পরিস্থিতি লেজেগোবরে করে ফেলে। ইমরান বলেন, আমি মনে করি আমেরিকা আফগানিস্তানে এসে সত্যিই বিপদে পড়ে গেছে। দেখুন প্রথমত তারা আফগানিস্তানে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সামরিক সমাধানের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তা কখনই হওয়ার ছিল না।
তারা পরে এসে বুঝতে পারে এবং রাজনৈতিকভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তখন তাদের দর কষাকষির ক্ষমতা চলে যায়। আরেক দফায় তালিবানের উত্থানের বিষয়টি আফগানিস্তানের জন্য কেমন হবে জানতে চাইলে ইমরান খান বলেন, আফগানিস্তানের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে এমন সরকার গঠন করা, যেখানে বিভিন্ন ধরনের দল বা ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আফগানিস্তানের যেকোনও ধরনের গৃহযুদ্ধ পাকিস্তানের জন্য আরও শরণার্থী তৈরি করবে।
তিন দশকের বেশি সময় ধরে পাকিস্তান কয়েক লক্ষ আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু পাকিস্তানের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা এমন নয় যে, শরণার্থীদের আরেকটি ঢেউ সামলাতে পারবে।’ সন্ত্রাস-বিরোধী যুদ্ধের নামে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানকে ‘ভাড়াটে বন্দুকের মতো’ ব্যবহার করার জন্য ওয়াশিংটনের সমালোচনা করে ইমরান বলেন, অন্যের হয়ে লড়ার জন্য ৭০ হাজার সেনা হারিয়েছে এমন আর কোনও দেশ নেই।