।। মণিমালা দাস ।। করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় আসা পরিবারগুলিকে বিনামূল্যে জনপ্রতি ৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়েও প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনায় এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় চালু থাকবে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা৷ মে-জুন থেকে দীপাবলি পর্যন্ত চালু থাকবে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা।’ এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার চলতি বছরের মে-জুন মাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনায় দেশের ৮০ কোটি উপভোক্তাকে প্রতি মাসে ৫ কেজি চাল সরবরাহ করার কথা ঘোষণা করেছিলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই কঠিন সময়ে কেউ খালিপেটে থাকবে না। আগামী দীপাবলি পর্যন্ত চলবে বিনামূল্যে রেশন। প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনায় দেশের ৮০ কোটি মানুষ আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন পাবে। এই উদ্যোগের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনায় রাজ্যের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় আসা ৫ লক্ষ ৯৫ হাজার পরিবার উপকৃত হচ্ছেন। করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতে রাজ্যের দরিদ্র পরিবারগুলিকে যাতে কোনওভাবেই খাদ্য সংকটের মুখে পড়তে না হয় সেই লক্ষ্যেই এই যোজনা৷ এই যোজনায় প্রতি পরিবার প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ চাল পাচ্ছেন।
আগরতলা শহর সংলগ্ন খেজুরবাগানের ভজন দেব, বীণা পারসি, লালমোহন রায়, পূর্ব প্রতাপগড়ের রিংকু দাস, বড়দোয়ালির কমলা দাস, আড়ালিয়ার সুজিত সূত্রধররা এই যোজনার আওতায় বিনামূল্যে চাল পাচ্ছেন। এরা প্রত্যেকেই দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারের প্রতিনিধি।
খেজুরবাগানের গোয়ালাবস্তির বাসিন্দা ভজন দেব৷ তার একটি সাইকেল মেরামতের দোকান ছিলো। এই সাইকেল মেরামতের অর্থেই তার সংসার চলতো। করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতে যখন পরিবারের অন্ন সংস্থানের চিন্তায় তিনি অসহায় হয়ে পড়েছিলেন তখনই প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা তার মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
তিনি জানালেন, নভেম্বর পর্যন্ত অন্তত আমাকে ভাতের চিন্তা করতে হবে না। এই যোজনায় আমি এখন মাথাপিছু ৫ কেজি করে স্বাভাবিক বরাদ্দের অতিরিক্ত আরও ১৫ কেজি চাল পাচ্ছি। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী কোভিড স্পেশাল প্যাকেজে খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট ও নগদ ১ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা পেয়ে আমি উপকৃত।
খেজুরবাগানেরই বীণা পারসি গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতে তারও বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিচারিকার কাজ ব্যাহত হয়েছে। তিনি জানালেন, প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনায় চাল পাওয়ায় আমাকে অন্তত খালি পেটে থাকতে হচ্ছে না। আড়ালিয়ার সুজিত সূত্রধর পেশায় রিক্সাচালক।
তার স্ত্রী বাড়ি বাড়ি গৃহপরিচারিকার কাজ করে দু’জনের আয়ে তাদের সংসার চলে। করোনা পরিস্থিতিতে তাদেরকেও ভাবিয়ে তুলেছিলো। সুজিত সূত্রধর জানালেন, প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনায় বিনামূল্যে চাল পাওয়ায় আমাদের অনেক উপকার হয়েছে।
তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী কোভিড স্পেশাল রিলিফ প্যাকেজ প্রকল্পে আমি খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট ও নগদ ১ হাজার টাকা সহায়তা পেয়েছি। এই সংকটের সময়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যেভাবে আমাদের মতো মানুষের পাশে দাড়িয়েছে তাতে আমি কৃতজ্ঞ।