স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৩ জুলাই।।উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিদ্যুৎ মন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা শুক্রবার বিদ্যুৎ নিগমের কনফারেন্স হলে নিগমের কর্মকর্তাদের নিয়ে পর্যালোচনা মূলক বৈঠকে সামিল হন। রাজ্যের সাম্প্রতিক বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
রাজ্যের সার্বিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে শুক্রবার বিদ্যুতের কনফারেন্স হলে বিদ্যুৎ মন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মার উপস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোকপাত করা হয়।
বৈঠকের শামিল হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী বিদ্যুৎ মন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা বলেন,, বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে গড়ে ৯০ শতাংশ হারে বিদ্যুতের মাসল বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ মাসল বৃদ্ধি করা হয়নি। জনগণের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে রাজ্য সরকার বিদ্যুতের মাসল বৃদ্ধি করে।
মাশুল বৃদ্ধি না করার ফলে আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে সঠিকভাবে পরিচালিত ট্রান্সমিশন ব্যবস্থা উন্নত করা প্রয়োজন। শুধু বিদ্যুৎ থাকলেই চলবে না বিদ্যুৎ সরবরাহ করা উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হয়। সেজন্য রাজ্য সরকার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বিদ্যুৎ ট্রানস্মিশন ব্যবস্থা উন্নয়ন করা সহ সাব স্টেশনের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি তথ্য দিয়ে জানান, গত এক মাসের মধ্যে ছয়টি সাব স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। আরো বেশ কয়েকটি সাব স্টেশন স্থাপনের কাজ চলছে। সেগুলি স্থাপন করা হলে রাজ্যে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। বর্তমানে বিদ্যুৎ নিয়ম প্রচুর কাজ করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বৃহস্পতিবার জিবি হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বিষয়ে স্পষ্টীকরণ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা বলেন এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ নিগমের কোন দোষ নেই।
আভ্যন্তরীণ ত্রুটির কারণেই জিবি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ বিভাগ ঘটেছে। আভ্যন্তরীণ ত্রুটি সারানোর দায়িত্ব জিবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তবে একমাত্র বিদ্যুৎ নিগমের আধিকারিকরা সেখানে ছুটে গিয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী।
বিদ্যুৎ মন্ত্রী আরও জানান রাজ্যর প্রিপেইড মিটার ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শীঘ্রই সারা রাজ্যে প্রিপেড ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানান তিনি। বিদ্যুৎ মন্ত্রী বলেন প্রিপেইড ব্যবস্থা চালুর ফলে বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা আরো অনেকটা কমে যাবে।
ইতিমধ্যেই যেসব জায়গায় প্রিপেড ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ নিগমের অনেক বেড়েছে বলে দাবি করেছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী। প্রসঙ্গক্রমে বিদ্যুৎ মন্ত্রী আরও জানান করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত পরিস্থিতিতে রাজ্যের মানুষের আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে কোথাও বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ করা হচ্ছে না।
তবে কীভাবে বকেয়া আদায় করা যায় সে বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। যাদের বকেয়া বেশি জমে গেছে তাদেরকে এককালীন কিংবা কিস্তিতে বকেয়া আদায়ের চেষ্টা করা হবে বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।বিদ্যুৎ মন্ত্রী জানান রাজ্যে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত হলেই চলবে না, বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ট্রান্সমিশন ব্যবস্থা উন্নত করার প্রয়োজন রয়েছে।
এই ব্যবস্থা উন্নয়ন করা সহ বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কাছ থেকে ১৯৩৫কোটি টাকা দিয়েছে বল তিনি জানিয়েছেন। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে যেসব কাজ চলেছে তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গক্রমে বিদ্যুৎ জানান আমবাসা গঙ্গানগর পর্যন্ত বিদ্যুৎ ট্রানস্মিশন লাইন ইতিমধ্যেই স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই গন্ডাছড়া পর্যন্ত ট্রানমিশন লাইন টানার কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী।