।। গৌতম দাস ।। জিরানীয়া মহকুমার একটি গ্রাম উত্তর চাম্পামুড়া। আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক ধরে খয়েরপুর হয়ে পুরাতন আগরতলা ব্লক কার্যালয় পেরিয়ে একটু এগিয়ে গেলেই উত্তর চাম্পামুড়া গ্রাম পঞ্চায়েত। এই পঞ্চায়েতেরই একটি পাড়া পূর্ব চাম্পামুড়া। এক সময় এই গ্রামে পানীয় জলের খুব সমস্যা ছিলো। গ্রামে ছিলো না পানীয় জলের কোনও উৎস৷
গ্রামবাসীদের ২-৩ কিলোমিটার দূরে যেতে হতো পানীয় জলের জন্য। শুখা মরশুমে সমস্যা আরও প্রবল হতো। দীর্ঘদিনের এই সমস্যা ছিলো তাদের নিত্যসঙ্গী। উন্নয়নের ছোঁয়ায় এই পরিচিত দৃশ্য এখন বদলে গেছে। সম্প্রতি এই গ্রামে পানীয় জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তর থেকে একটি গভীর নলকূপ বসানো হয়।
এরফলে এই গ্রামের ২০-৩০ পরিবার এখন গ্রামেই পানীয় জল পাচ্ছেন। পানীয় জলের জন্য গ্রামবাসীদের আরও ২-৩ কিলোমিটার দূরে পায়ে হেঁটে যেতে হচ্ছে না। গ্রামে গভীর নলকূপ বসে যাওয়ায় বাড়ি বাড়ি অটল জলধারা মিশনে দেওয়া হয়েছে পানীয় জলের সংযোগ।
পূর্ব চাম্পামুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে এই গভীর নলকূপটি বসাতে ব্যয় হয়েছে ৩ লক্ষ ১১ হাজার ৩৩৯ টাকা। গ্রামেই পানীয় জল পেয়ে এখন খুশি গ্রামবাসীরা। কথা হচ্ছিলো পূর্ব চাম্পামুড়ার বাসিন্দা মধ্যবয়সী গৃহবধূ রীতা শুরুবৈদ্যের সাথে। তিনি জানালেন, এক সময় পানীয় জলের জন্য আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এই সমস্যা প্রায় ২০ বছর ধরে আমি দেখে আসছি।
এখন গ্রামের প্রত্যেকের বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে গেছে। পূর্ব চাম্পামুড়া গ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থাও খুব একটা উন্নত ছিলো না। সব ঋতুতে চলার উপযোগী কোনও সড়ক ছিলো না এই গ্রামে। সম্প্রতি এই গ্রামে আসার প্রায় ৫০০ মিটার রাস্তা ইঁট সলিং করা হয়েছে। এখন সব ঋতুতে চলাচলের উপযোগী সড়ক হয়েছে।
এই ইঁট সলিং রাস্তা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২ লক্ষ ১৩ হাজার ২০৩ টাকা। গাড়ি চলাচলও শুরু করেছে। গ্রামের যুবক চন্দন মজুমদার জানালেন, এক সময় গ্রামবাসীদের ন্যায্যমূল্যের দোকান থেকে পণ্য সামগ্রী আনতে কাঁচা সড়ক ধরেই যাতায়াত করতে হতো।
বর্ষাকালে এই কাঁচা সড়কের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়তো। গ্রামবাসীদের এই সমস্যা এখন নেই। ইট সলিং রাস্তা হওয়ায় গ্রামবাসীরা খুব সহজেই ব্লক ও মহকুমা সদরে যেতে পারছেন। দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান হওয়ায় পূর্ব চাম্পামুড়ার মানুষ এখন খুশি।
তারা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনিমা দাস জানালেন, উত্তর চাম্পামুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সার্বিক বিকাশে পঞ্চায়েত কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামীদিনে এই গ্রাম পঞ্চায়েত একটি আদর্শ গ্রাম পঞ্চায়েত হয়ে উঠবে।