।। রোমেল চাকমা ।। রাজ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে পূর্ত দপ্তর সড়ক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেছে। গ্রামীণ এলাকাগুলিকে জেলা সদর মহকুমা সদর- ব্লক কার্যালয়ের সাথে যুক্ত করতে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এজন্য গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন ছড়া ও নদীর উপর থাকা জীর্ণ ও নড়বড়ে সেতুগুলির জায়গায় আরসিসি ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই পুরনো ব্রিজগুলির বদলে স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়৷ বিশেষ করে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় দ্রুত চলাচলের জন্য আন্ত জেলা সড়ক সংযোগ জরুরী হয়ে পড়েছিল। তাই রাজ্যের আটটি জেলায় পূর্ত দপ্তরের তত্বাবধানে সড়ক সংযোগের কাজকর্ম জারি রয়েছে। এরমধ্যে বিভিন্ন জেলা কেন্দ্রীয় প্রকল্পে জাতীয় সড়কের আওতায় চলে এসেছে।
রাজ্যের ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট ও কৈলাসহরের পূর্ত দপ্তরের ডিভিশন কার্যালয় থেকে বিভিন্ন এলাকায় নতুন নতুন পাকা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে শুধু কুমারঘাট পূর্ত দপ্তর ডিভিশনের অধীনে গঙ্গানগর পূর্ত সাব ডিভিশনে ৫টি পাকা সেতু গড়ে তোলা হচ্ছে। ৫টির মধ্যে ১টি আর সি সি সেতুর নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
বাকীগুলির নির্মাণ কাজ চলছে জোরকদমে। ফটিকরায় থেকে চৌমুহনীবাজার যাওয়ার সড়কে শিমুলতলা ও রাতাছড়ায় দুটি আরসিসি ব্রিজ নির্মাণের কাজ হচ্ছে। এই দুটি ব্রিজ তৈরির জন্য চার কোটি টাকার অধিক বরাদ্দ ধরা হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শুরু হয় ব্রিজ নির্মাণের কাজ। যা শেষ হবে ২০২২ এর মার্চ মাস নাগাদ।
এই সড়কে শিমুলতলা এলাকায় ছড়ার উপর নির্মিত আরসিসি ব্রিজের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ১৪ লক্ষ ৮৭ হাজার ৯৩২ টাকা৷ দৈর্ঘ্যে এই ব্রিজটি ৪৮ মিটার এবং প্রস্থে ৭.৫ মিটার। রাতাছড়ায় নির্মত আরসিসি ব্রিজটিও দৈর্ঘ্যে একই রয়েছে। তবে এই ব্রিজের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ২২ লক্ষ ৩৩ হাজার ৮৯৯ টাকা। এরমধ্যে লালজুরি এলাকায় পাকা সেতু নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বাকি দুটি পাকা সেতু নির্মাণের কাজ চলছে নদীয়াপুর থেকে সাইদাছড়া সড়কে। আর এই পাকা সেতুগুলি নির্মাণের কাজ নিজে দাড়িয়ে তদারকি করে চলছেন খোদ পূর্ত দপ্তরের গঙ্গানগর সাব ডিভিশনের এসডিও চিন্টু দেববর্মা। তার অধীনে চলা বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানান তিনি।
পূর্ত দপ্তরের এই কর্মযজ্ঞে মুখে হাসি ফুটেছে গোটা এলাকার জনসাধারণের। এর মধ্য দিয়ে বদলে যাবে আশপাশের আরও বেশ কয়েকটি এলাকার আর্থ সামাজিক ব্যবস্থা। এর ফলে উপকৃত হবেন ফটিকরায়, সায়দারপার, আমরাপাশা, পালবাজার, নেপালটিলা, ডেমডুম সহ বিস্তীর্ণ এলাকার লোকজন।
এসকল এলাকার মানুষও অধীর আগ্রহে রয়েছেন কবে নাগাদ আরসিসি সেতু শেষ হবে এবং তাদের যাতায়াত ব্যবস্থা আরও উন্নত মানের হবে। নির্মাণের কাজ অপরদিকে কৈলাসহর পূর্ত দপ্তরের অধীনে মনু নদীর উপর একটি বৃহৎ আরসিসি সেতু নির্মিত হচ্ছে।
কৈলাসহর থেকে ফটিকরায়ের রাস্তায় এই পাকা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। ব্রিজটির দৈর্ঘ্য হবে ১৭৬ মিটার, প্রস্থ হবে ৭.৫ মিটার। ব্রিজটি নির্মাণে টেন্ডার ভ্যালু রয়েছে ১৫ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। ব্রিজটিতে থাকবে মোট ৯টি আরসিসি পিলার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার সময়সীমা ধরা হয়েছে ২০২২ সালের জুন মাস।
আর এই পাকা সেতু নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হলে ঊনকোটি জেলা সদর কৈলাসহরের চেহারাই আমূল পাল্টে যাবে। উপকৃত হবেন যানবাহন চালক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সমাজও। তাই গোটা জেলার মানুষও রয়েছেন অধীর আগ্রহ নিয়ে।