স্টাফ রিপোর্টার, কল্যাণপুর, ৯ জুন।। প্রতিদিনকার মত আর কখনো মা ছেলের ঝগড়া বিবাদ শুনবে না প্রতিবেশী৷ দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ অভিমানে একই দিনে এক লহমায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিল সহজ-সরল পরিবারের মা ও ছেলে৷ বুধবার দিনের শুরুতেই মা ছেলের তীব্র বাকবিতণ্ডার পর এক সময়ে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা বাড়ি৷
রক্ষণশীল পরিবারের গৃহকর্তা পেটের তাগিদে অন্যত্র কাজের সন্ধানে বেরিয়ে ছিলেন৷ হঠাৎ প্রতিবেশী এক মহিলা ওই নিস্তব্ধ বাড়িতে প্রবেশ করতেই মা-ছেলের মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন৷ তড়িঘড়ি অন্যান্য লোকদের ডেকে এনে চিকিৎসার জন্য উভয়কেই কল্যাণপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷
অবস্থা বেগতিক বুঝে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সাথে সাথেই মা ছেলেকে স্থানান্তরিত করে দেয় রাজধানীর জিবি হাসপাতালে৷ কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে মায়ের আগেই পথিমধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ছেলে৷ হাসপাতালে চির নিদ্রায় শায়িত মা’ও৷ বিস্তারিত খবরে প্রকাশ, কল্যাণপুর থানা এলাকার রামদয়ালবাড়ি এডিসি ভিলেজের জনজাতি পরিবার ইন্দ্রকুমার দেববর্মার৷
পরিবারের স্ত্রী কুমারী দেববর্মা (৪২) ও এক ছেলে সমরেন্দ্র দেববর্মা (২৫)কে নিয়ে সংসার৷ দীর্ঘদিন ধরেই ছেলে সমরেন্দ্র বিপথে পা দিয়ে সংসারে ঝুটঝামেলা লাগাতো৷ অভিযোগ প্রায় প্রতিদিনই ওই বাড়িতে মা ও ছেলের মধ্যে বিভিন্ন অছিলায় ঝগড়া-বিবাদ চিৎকার-চেঁচামেচি প্রত্যক্ষ করতো স্থানীয় গ্রামবাসীরা৷
বুধবার সকালে নিত্যনৈমিত্তিক রেওয়াজে মা ছেলের ঝামেলা শুরু হয়৷ কিন্তু হঠাৎ এই পরিবার নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে৷ এরই মধ্যে স্থানীয় এক প্রতিবেশী ওই বাড়িতে গেলে মা ছেলের করুণ দৃশ্য চোখে পড়ে৷ জানা গেছে, মা ও ছেলে রাবার বাগানের অ্যাসিড জাতীয় কীটনাশক খেয়ে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছিল৷
প্রতিবেশীদের সহায়তায় তাদেরকে কল্যাণপুর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল চিকিৎসকরা সাথে সাথেই তাদেরকে জিবি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেন৷ কিন্তু বড়মুড়া পাহাড় অতিক্রম করতেই ছেলে সমরেন্দ্র দেববর্মা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে৷
জিবি হাসপাতালে পৌঁছানোর পর মারা যায় কুমারী দেববর্মা৷ গোটা ঘটনায় সন্নিহিত গ্রামে তীব্র চাঞ্চল্য ও শোকের আবহ তৈরি হয়েছে৷ পুলিশ ঘটনাটিকে নিয়ে ইউডি মামলা গ্রহণ করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷