স্টাফ রিপোর্টার, চুরাইবাড়ি, ৯ জুন।। বর্তমান সরকার সিন্ডিকেটরাজ ও দালাল চক্রকে কোন ভাবেই প্রশ্রয় দেবে না। নেশাজাতীয় সামগ্রী যেন কোনভাবেই রাজ্যে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকেও সরকার সজাগ দৃষ্টি রাখছে। আজ ত্রিপুরা-আসাম সীমান্তের চুরাইবাড়ি আধুনিক সীমান্ত চেকপোস্ট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলায় সময় একথা জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই চেকপোস্ট সম্পর্কে বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে।
তার সত্যতা ও চেকপোস্টের ব্যবস্থাপনা সরজমিনে খতিয়ে দেখতেই চুরাইবাড়ি চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, কোন ধরণের নেশাজাতীয় সামগ্রী ও নজরদারি এড়িয়ে কোন গাড়ি যেন রাজ্যে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য সিসি টিভির মাধ্যমে নজরদারির জন্য এখানকার আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সিন্ডিকেটরাজ ও কমিশন বাণিজ্যকে প্রশ্রয় দেবে না সরকার। স্বচ্ছতার সাথে রাজ্য সরকার মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, উত্তর ত্রিপুরা জেলার চুরাইবাড়ি চেকপোস্ট দিয়ে মূলত রাজ্যের পণ্য পরিবহণের ট্রাক ও যাত্রীবাহী গাড়ি প্রবেশ করে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে চুরাইবাড়ি আধুনিক সীমান্ত চেকপোস্টে চেকপোস্টের কাজকর্ম নিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সাথে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী চুরাইবাড়ি চেকপোস্ট পরিদর্শনে এসে চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক ও কর্মীদের কাছ থেকে চেকপোস্টের পরিচালন পদ্ধতি ও যাবতীয় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও খোজখবর নেন।
https://www.facebook.com/bjpbiplab/videos/185585053471285/
২০২০-২১ অর্থবর্ষে যত সংখ্যাক গাড়িকে জরিমানা করা হয়েছে তা দেখে সংশয় প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান কি কি প্যারামিটারে যানবাহন থেকে ফাইন আদায় করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী সফরের আগে এদিন মোট ৯৬টি ট্রাক চেকপোস্ট অতিক্রম করলেও একটি ট্রাকও জরিমানা আদায়ের মাপকাঠিতে আসেনি বলে আধিকারিকগণ জানান।
এরপর সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ট্রাক চেকিং করার সময় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১৫টি ট্রাক থেকেই ৩টি ট্রাক জরিমানার আওতায় আসে৷ আধিকারিকগণ জানান, চুরাইবাড়ি চেকপোস্ট অতিক্রমের সময় সব গাড়ি চেক করা হয়না।
শুধুমাত্র রেন্ডম পদ্ধতিতে এবং সন্দেহভাজন গাড়িগুলিতেই চেকিং করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বিক্রয় কর দপ্তরের আধিকারিক এবং চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের সমস্ত পন্যবাহী ট্রাক স্কেনার সহ আধুনিক পদ্ধতিতে চেকিং করার নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন চেকপোস্টের ডিজিটালাইজেশন, সিঙ্গেল উইন্ডো সার্ভিস সহ আধুনিকিকরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
কোন পণ্যবাহী গাড়ি যেন অবৈধভাবে রাজ্যে প্রবেশ করতে না পারে ও বাঁকা পথে অন্যকোনভাবে ম্যানেজ করে যেন কোন পন্যবাহী ট্রাক জরিমানা ফাঁকি দিতে না পারে তা নিশ্চিত করতেও আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এদিন চুরাইবাড়ি চেকপোস্ট পরিদর্শনের সময় চেকপোস্টের প্রবেশের মুখে দাড়িয়ে থাকা পন্যবাহী চারটি ট্রাকের নির্ধারিত প্যারামিটারে মাপা হয়।
দেখা গেছে তার মধ্যে দুটি ট্রাকই জরিমানার আওতায় এসেছে। সাথে সাথেই ঐ দুটি ট্রাক থেকে জরিমানা আদায় করা হয়৷ চুরাইবাড়ি চেকপোস্টে এদিন সন্দেহভাজন পণ্যবাহী ট্রাকগুলিতে কিভাবে চেকিং করা হয় তাও পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী।চেকপোস্ট পরিদর্শনে আসার সময় জাতীয় সড়কের পাশে পাথর ভাঙ্গার বেশ কিছু মেশিন মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আসে।
https://www.facebook.com/bjpbiplab/videos/322644402771592/
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বৈধ অনুমোদন নিয়ে এইগুলি স্থাপন করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রী উত্তর জেলার জেলাশাসক নাগেশ কুমার বি-কে নির্দেশ দেন। তার পাশাপাশি চুরাইবাড়ি ছাড়াও সড়ক পথে রাজ্যে প্রবেশের বিকল্প সড়কগুলিতেও প্রয়োজনীয় নজর রাখার নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে শিল্প গড়ে উঠুক তা সরকার চায়। কিন্তু এই শিল্প যেন বৈধভাবে গড়ে উঠে।
https://www.facebook.com/bjpbiplab/videos/486435099305112/
এদিন চুরাইবাড়ি চেকপোস্ট পরিদর্শনের সময় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বিধানসভার উপাধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক ভি এস যাদব, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব পি কে গোয়েল, পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী, ধর্মনগর মহকুমার মহকুমা শাসক, জেলা প্রশাসন, পরিবহণ ও বিক্রয়কর দপ্তরের আধিকারিকগণ।