অনলাইন ডেস্ক, ৭ জুন।। ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনকে বৈধতা দিতে যাচ্ছে মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদর। দেশটির প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে এ কথা জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে ঘোষণাটি দেন ‘বিটকয়েন ২০২১’ সম্মেলনে। ডিজিটাল ওয়ালেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্ট্রাইকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিটকয়েনের মাধ্যমে নিজ দেশের আধুনিক আর্থিক অবকাঠামো তৈরি করতে চান তিনি।
ধারণকৃত ভিডিওতে প্রেসিডেন্ট বলেন, আগামী সপ্তাহে বিটকয়েনকে বৈধ মুদ্রা হিসেবে প্রচলনের জন্য কংগ্রেসে বিল উত্থাপন করব। যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে ৪ ও ৫ জুন সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। বিটকয়েনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসে সেটাই সবচেয়ে বড় সম্মেলন বলা হচ্ছে।
একই সম্মেলনে ডিজিটাল মুদ্রা রাখার সেবা স্ট্রাইকের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মলার্স বলেন, বিটকয়েনের রিজার্ভ উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোকে মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কা সামলানোর একটি পথ করে দেবে।
বিবিসি জানায়, প্রেসিডেন্টের এই পরিকল্পনায় দেশটির কংগ্রেস সমর্থন জানালে, বিশ্বে এল সালভাদরই হবে ডিজিটাল এই মুদ্রাকে বৈধতা দেয়া প্রথম দেশ। সেক্ষেত্রে মার্কিন ডলারের পাশাপাশি বিট কয়েন হবে দেশটির আনুষ্ঠানিক মুদ্রা।
এল সালভাদরের বিধানসভায় বুকেলের নিউ আইডিয়া পার্টির নিয়ন্ত্রণ আছে। সুতরাং ধরে নেওয়া যায় তাঁর বিলটি পাস হয়ে যাবে। প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে জানান, দেশের বাইরে অবস্থানরত নাগরিকরা যাতে সহজে দেশে অর্থ পাঠাতে পারে, সে লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বিটকয়েন সংক্রান্ত একটি সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়বে, দেশের অর্থনীতির বাইরে থেকে যাওয়া হাজারো মানুষকে আর্থিকভাবে সংযুক্ত করা যাবে। এর মাধ্যমে দেশটিতে বিনিয়োগ বাড়বে বলেও আশা করছেন এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট।
দেশটির শতকরা ৭০ ভাগ মানুষেরই ব্যাংক আ্যকাউন্ট নেই। বিটকয়েনকে বৈধতা দিয়ে তাদেরকেই অর্থনীতিতে যুক্ত করতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট বুকেলে।
এল সালভাদরের অর্থনীতি মূলত প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের উপরেই নির্ভর করে। দেশের আভ্যন্তরীণ প্রবৃদ্ধি বা জিডিপির ২০%ই এই খাত থেকে আসে। এল সালভাদরের বিশ লাখেরও বেশি নাগরিক বিভিন্ন দেশে কাজ করে। প্রতি বছর নিজ দেশে প্রায় চারশো কোটি ডলার অর্থ পাঠায় এই প্রবাসীরা।
এ সপ্তাহেই বিটকয়েন বিষয়টি কংগ্রেসে অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। তবে ঠিক কি পদ্ধতিতে নীতি বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়ে বিস্তারিত জানাননি প্রেসিডেন্ট বুকেলে।
বিটকয়েন একধরণের ভার্চুয়াল সম্পদ, সত্যিকারের অর্থনীতির সাথে যার সরাসরি কোন যুক্ততা নেই। গত কয়েকবছরে এই মুদ্রার দরে বড় ধরণের ওঠানামা হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকই নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রা চালুর সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখছে।
এপ্রিলে, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড ক্যাশ এবং ব্যাংক ডিপোজিটের পাশাপাশি ডিজিটাল মুদ্রা চালুর পরিকল্পনার কথা জানায়।