স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৯ মে।। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে গতাকাল মুখ্যমন্ত্রী যুব যোগাযোগ যোজনায় ২০২১-২২ অর্থবর্ষে রাজ্যের ২২টি ডিগ্রী কলেজ, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয় আগরতলা সরকারি মেডিকেল কলেজ, এন আই টি, টি আই টি, সরকারি আইন কলেজ, সরকারি সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় সহ মোট ৪০টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট ১৫ হাজার চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের স্মার্টফোন কেনার জন্য ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রিসভায় গৃহিত এই সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, গত অর্থবছর থেকে এই প্রকল্প রাজ্যে চালু হয়েছে। ৭,২৭৪ জন ছাত্রছাত্রীকে এই প্রকল্পে গতবছর মোবাইল ফোন কেনার জন্য ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। এরজন্য রাজ্য সরকারের ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। চলতি অর্থবর্ষের জন্য এ বাবদ ৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পের জনপ্রিয়তা এবং যুবকদের মধ্যে এই বিষয়ে স্বতস্ফুর্ততার জন্যই সরকার এই যোজনায় বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে।
তাছাড়াও তিনি গত বছরের এই প্রকল্পের সুবিধা প্রাপ্তদের জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, ধলাই জেলায় ৫২০ জন, গোমতী জেলায় ৯৯৪ জন, খোয়াই ৫৯৬, উত্তর ত্রিপুরা ৭৭৬, সিপাহীজলা ৭৯৯, দক্ষিণ ত্রিপুরা ১,১৯৪, ঊনকোটি ৬৫১ এবং পশ্চিম ত্রিপুরার ১,৭৫৬ জন ছাত্রছাত্রীকে ফোন কেনার জন্য এই আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, গত মন্ত্রিসভায় ২২ জন ককবরক বিষয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। টি পি এস সি’র মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধীন রাজ্যের ২২টি ডিগ্রী কলেজ একজন করে ককবরক অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর যেন দেওয়া যায় তারজন্য রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যেই ৪০টি বিভিন্ন বিষয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, টেট উত্তীর্ণ ৪৮৭ জন স্নাতক শিক্ষক এবং ১৯৮ জন অস্নাতক শিক্ষকদের পোস্টিং দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যাতে শিক্ষকরা গ্রীষ্মকালীন ছুটির পর স্ব-স্ব বিদ্যালয়ে যোগ দিতে পারে। এই ৪৮৭ জন স্নাতক শিক্ষকদের মধ্যে অ্যাশপিরেশন্যাল ব্লকের বিভিন্ন বিদ্যালয়গুলিতে ১৩৭ জনকে পোস্টিং দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও বাকিদের বিভিন্ন জেলার বিদ্যালয়গুলিতে পোস্টিং দেওয়ার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
পাশাপাশি ১৯৮জন অস্নাতক শিক্ষাকদের মধ্যে ৯২ জনকে রাজ্যের বিভিন্ন অ্যাশপিরেশন্যাল ব্লকে পোস্টিং দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং বাকিদের রাজ্যের অন্যান্য জেলার বিদ্যালয়গুলিতে পোস্টিং দেওয়ার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, আরও স্নাতক এবং অস্নাতক শিক্ষক মিলিয়ে ৫৪৩ জনের পোস্টিং ও তৈরি রয়েছে। তবে তাদের মধ্যে এককালীন ছাড় নিয়ে যারা টেট পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা ট্রেনি শিক্ষক হিসেবে কাজ করবে। যাদের বিএড বা ডিএলএড রয়েছে তাদের পোস্টিং-এর ক্ষেত্রে কোন সমস্যা থাকবেনা।
তবে যাদের বিএড বা ডিএলএড নেই তাদের কথা বিবেচনা করে রাজ্য সরকার এন সি টি’র কাছে পোস্টিং-এর জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন। সেই অনুমতি পেলেই তাদের পোস্টিং দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে তাদের পোস্টিং রাজ্যের চারটি ডায়েট কলেজের আশপাশের বিদ্যালয়গুলিতে দেওয়া হবে যাতে তারা শিক্ষকতার পাশাপাশি এই কোর্সগুলি করার সুবিধা পেতে পারে৷