অনলাইন ডেস্ক, ১৭ মে।। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হত্যাযজ্ঞের মধ্যে জাতিসংঘের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা কাউন্সিল বৈঠকে বসলেও আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতিতে সম্মত হতে পারেনি। বৈঠকের পর কেউ এ নিয়ে মুখ খোলেনি।
বিবিসি বলছে, ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আসেনি। কারণ তারা মনে করছে যে এটি দুই দেশের কূটনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।
রবিবারের বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘সব পক্ষ যদি অস্ত্র-বিরতি চায়’ তাহলে তাতে সমর্থনে প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া সংঘাত নিরসনে তারা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের উত্তেজনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে তার অবস্থান ‘ঠিক করে নেওয়ার (অ্যাডজাস্ট)’ আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাধার কারণে ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদ একসুরে কথা বলতে পারছে না। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের শনিবারের হামলায় একই পরিবারের ১০ সদস্য নিহত হওয়া এবং ৫ মাস বয়সী একটি মাত্র শিশুর বেঁচে যাওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল সবসময় আমাদের বলে যে আমরা যাতে তাদের জুতোয় পা রেখে দেখি, কিন্তু তারা তো কোনো জুতো পরেনি, তারা মিলিটারি বুট পরে রেখেছে। ’
জাতিসংঘে ইসরায়েলের স্থায়ী প্রতিনিধি গিলাদ এরদান হামাসের রকেট হামলায় নিহত ১০ বছর বয়সী এক আরব-ইসরায়েলি মেয়ে শিশুর ঘটনা তুলে ধরেন।
তিনি জোর দিয়ে দাবি করেন, ইসরায়েল ‘সন্ত্রাসীদের অবকাঠামো ভেঙে এবং বেসামরিক প্রাণহানি না করে’ আসলে ‘বীরোচিত’ কাজ করছে।
নিরাপত্তা কাউন্সিলকে কঠোর ভাষায় হামাসের নিন্দা করার আহ্বান জানিয়ে এরদান বলেছেন, নিজেদের সুরক্ষায় তারা সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ‘একেবারে আতঙ্কজনক’ এ সহিংসতা দ্রুত নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন এবং তিনি ‘অনিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা ও মানবিক সংকটের’ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন।
শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এ সংঘাত নিরসনে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়নি। ইসরায়েলের মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কারণে এ আলোচনায় বসার ক্ষেত্রেও বিলম্ব হয়। আগের দুটি বৈঠকে ইসরায়েলের নিন্দা এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিতে বাধা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। রবিবার একদিনের নারী ও শিশুসহ ৪২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। বহু ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সড়ক ধসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলি বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এবং গোলাবর্ষণে এখন পর্যন্ত ১৯২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫৮ শিশু ও ৩৪ নারী রয়েছেন। এছাড়া পশ্চিমতীরে বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে ১১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে।