অনলাইন ডেস্ক, ১৪ মে।। ভারতে করোনার ভয়ঙ্কর প্রকোপের মধ্যে আবার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কেরালা। পশ্চিম উপকূলীয় আরব সাগরের তীরবর্তী রাজ্য কেরালায় আগেই অক্সিজেন ও স্বাস্থ্য অবকাঠামোর উন্নতি করে করোনা মোকাবিলায় সবার নজর কাড়ে। এবার ক্ষমতায় এসেই কমিউনিস্ট সরকার করোনা চিকিৎসায় ইচ্ছামতো বিল বন্ধ করলো কেরালায়।
সরকারি হাসপাতালে শয্যা অপ্রতুল। তাই সামর্থ্য না থাকলেও মানুষ যাচ্ছেন বেসরকারি হসপাতালে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে। আর অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর এবং তাঁর পরিবারের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে চিকিৎসার জন্য মোটা অঙ্কের বিল ধরিয়ে দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
দেশের প্রায় সমস্ত রাজ্যেই উঠছে এরকম অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার দৃষ্টান্তমূলক নির্দেশ দিল কেরালা সরকার। কোভিড চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসার খরচের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর।
কেরালার নবনির্বাচিত সরকার জানিয়েছিল, এই মুহূর্তে তাদের প্রথম কর্তব্য করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। আর সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বেশ কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেই সূত্র ধরেই এবার রাজ্যের সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালের কাছে একটি নির্দেশলিপি পাঠাল সরকার। চিকিৎসার বিভিন্ন স্তরে খরচের উর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে এই নির্দেশিকায়।
যেমন সাধারণ শয্যার ক্ষেত্রে দৈনিক বিল ২৬৪৫ টাকার বেশি হবে না কোনোমতেই। হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনটের ক্ষেত্রে এই মাত্রাটা ৩৭৯৫ টাকা। আর আইসিইউ এবং আইসিইউই শয্যার ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৮৫৮০ এবং ১৩৮০০ টাকা। তবে রাজ্যের যে-সমস্ত হাসপাতাল এনএবিএইচ অনুমোদিত, সেখানে এই খরচ সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বেশি হতে পারে।
শয্যা খরচ বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি অক্সিজেন সিলিন্ডার, পিপিই কিট এবং বিভিন্ন ওষুধের খরচও বেঁধে দিয়েছে সরকার। এমনকি নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানানো হয়েছে, সাধারণ শয্যার রোগীদের থেকে দৈনিক দুটি এবং আইসিইউ রোগীদের ক্ষেত্রে দৈনিক ৫টির বেশি পিপিই কিটের মূল্য নেওয়া যাবে না। তবে রেমডিসিভারের মতো দুর্মূল্য ওষুধের দামের ক্ষেত্রে কোনো উর্ধ্বসীমা রাখা হয়নি।
ইতিমধ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঘিরে কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে ভারতের প্রতিটা প্রান্তে। সেখানে কেরালা সরকারের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে আশাপ্রদ। পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও সরকারি স্বাস্থ্যবীমা প্রয়োগের বিষয়টিও কেরালা সরকারের ব্যতিক্রমী ভূমিকাকেই তুলে ধরে।
যদিও সামগ্রিকভাবে নির্দেশিকা কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক তৎপরতার বিশেষ প্রয়োজন থেকেই যায়। তথাপি কেরালা প্রশাসন সুষ্ঠভাবে সমগ্র বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে সমর্থ্য হলে তা সমগ্র ভারতের জন্য শুভ দৃষ্টান্ত রূপে বিবেচিত হবে।