রয়টার্সের জানায়, সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন মিয়ানমারে চলমান হত্যা ও নৃশংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি আশা করব রাজনৈতিক বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে দেওয়া প্রস্তাব মিয়ানমার নিঃশর্তভাবে বিবেচনা করবে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর বলেন, নৃশংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। মিয়ানমারে গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা ও শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি অনুরোধ থাকবে, বিক্ষোভ দমনের নামে সহিংসতা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিন। মিয়ানমারে শান্তি ফেরাতে আসিয়ান দেশগুলোর আহ্বান ও উদ্যোগ দেশটির সেনাবাহিনী মেনে চলবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং।
আসিয়ান সম্মেলনে মিয়ানমারের কোনো সেনাপ্রধান এর আগে এভাবে অংশ নেননি। সাধারণত নিম্নসারির কোনো অফিসার অথবা সরকারি কর্মকর্তা অংশ নিয়ে থাকেন। ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে প্রায় সাড়ে সাতশ মানুষকে হত্যা করেছে সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন কয়েক হাজার নেতাকর্মী। এরপর প্রথম বিদেশ সফরে আজ জাকার্তা পৌঁছান জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সেনা অভ্যুত্থানের পর আড়াই মাস ধরে চলা বিক্ষোভে মিয়ানমারে সেনা-পুলিশের গুলিতে এখন পর্যন্ত শিশুসহ সাত শতাধিক বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে অধিকার সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)। আটক হয়েছেন সাংবাদিক, শিল্পীসহ তিন সহস্রাধিক বিক্ষোভকারী।
নিজ দেশের মানুষের ওপর চরম শক্তি প্রয়োগ ও হত্যার জেরে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন জান্তাপ্রধান। মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই গত ৫ ফেব্রুয়ারি ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া দেশটির চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য আসিয়ানের বিশেষ বৈঠক আয়োজনের আহ্বান জানায়। তারা আলোচনার মাধ্যমে মিয়ানমারের সংকট নিরসন করতে চাইছে। দেশটির সেনাবাহিনী এবং উৎখাত হওয়া সরকারের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার কথা বলছে। মিয়ানমারের বিরোধীদের ঘোষিত ছায়া সরকার এই বৈঠকে থাকার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের রাখা হয়নি। যদিও সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর আসিয়ান জোট থেকে মিয়ানমারকে বের করে দেওয়ার দাবিও উঠেছে। তবে আসিয়ান জানিয়েছে, এ জোট ঐতিহাসিকভাবেই কোনো সদস্যদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা ঘামায় না। এর আগে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মিয়ানমারের সংকট নিরসনে আসিয়ান নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।