যে যন্ত্রটি মঙ্গলগ্রহে অক্সিজেন তৈরি করা হয়েছে, সেটির নাম ‘মার্স অক্সিজেন ইন-সিটু রিসোর্স ইউটিলাইজেশন’ বা সংক্ষেপে মোক্সি, আকারে একটা পাউরুটি সেঁকার টোস্টারের সমান বিবৃতিতে নাসা জানিয়েছে, মোক্সি সম্প্রতি পাঁচ গ্রাম অক্সিজেন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে- যা দিয়ে মঙ্গলগ্রহে একজন নভোচারী প্রায় দশ মিনিট শ্বাস নিতে পারবেন। মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডই বেশি, প্রায় ৯৬ শতাংশ। অক্সিজেন আছে মাত্র শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ।
অন্যদিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আছে ২১ শতাংশ অক্সিজেন। কার্বন ডাইঅক্সাইডের প্রতিটি অণুতে থাকে কার্বনের একটি এবং অক্সিজেনের দুটি পরমাণু। মোক্সি নামের যন্ত্রটি মঙ্গলের কার্বন ডাইঅক্সাইডের অণু থেকে অক্সিজেন বের করতে সক্ষম; আর অক্সিজেন বের করে নেওয়ার পর যে কার্বন মনোক্সাইড অবশেষ হিসেবে থেকে যায়, তা ছেড়ে দেয়া হয় মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে। নাসার যে গবেষক দল মোক্সি যন্ত্রটি পরিচালনা করছেন, তারা বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করে দেখছেন কিভাবে মোক্সিকে সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়।
গবেষক দলের এক সদস্য জানিয়েছেন, এটি দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় দশ গ্রাম পর্যন্ত অক্সিজেন উৎপাদন করা যাবে। নাসার স্পেস টেকনোলজি মিশন পরিচালনা কমিটির প্রযুক্তি বিষয়ক পরিচালক ট্রেডি কোর্টেস বলেন, “মোক্সি যে ভিনগ্রহে অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রথম যন্ত্র কেবল তাই নয়, এটি হচ্ছে এ ধরণের প্রথম প্রযুক্তি যা ভবিষ্যতের অভিযানগুলোকে ভিন্ন কোনো গ্রহে সেখানকার পরিবেশের উপাদান ব্যবহার করেই বেঁচে থাকতে সহায়তা করবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নাসা মনে করছে, ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে মানুষের অভিযানের সময় তাদের পুরোটা সময়ের জন্য যে অক্সিজেনের দরকার হবে তা পৃথিবী থেকে বহন করে নেয়ার পরিবর্তে মোক্সি নামের এই যন্ত্রটিরই আরও বড় কোন সংস্করণ সাথে নেয়া যেতে পারে।’