অনলাইন ডেস্ক, ১৭ এপ্রিল।। বাতাসে করোনা ভাইরাস ছড়ায় কিনা এটা নিয়ে প্রায় এক বছর ধরেই তর্ক বিতর্ক হচ্ছে। সেই সাথে হচ্ছে গবেষণা। এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন বিপর্যস্ত পুরো দুনিয়া তখন গবেষণা বলছে করোনাভাইরাস বাতাসেও ছড়ায়। সম্প্রতি মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট–এ এমনটাই বলা হয়েছে। সেই সাথে বিষয়টির পক্ষে উপস্থাপন করা হয়েছে জোড়ালো প্রমাণ।
উপস্থাপিত গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে ‘SARS-CoV-2’ ভাইরাসটি বাতাসে ছড়ায়। আর এই ভাইরাসের কারণেই হয় কোভিড–১৯। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার ৬ জন বিশেষজ্ঞ যৌথভাবে গবেষণা করে হাতে কলমে এর স্বপক্ষে প্রমাণ পেয়েছেন। ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ডের গবেষক ত্রিশ গ্রীনহালের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের গবেষক দল ইতিমধ্যেই বাতাসে কোভিড ছড়ানোর বিষয়টি নজরে এনে ১০ পাতার রিসার্চ পেপার জমা দিয়েছেন।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট হোস লুইস জিমেনেজের মতে, বড় ড্রপলেটের মাধ্যমে এখন আর করোনা ছড়ায় না। অর্থাৎ হাঁচি, কাশি দিলে যে ছোট্ট কণা বা ড্রপলেট ছিটকে আসে, তা থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকটাই কম। তাই তার মতে নতুন এই গবেষণাকে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সেই হিসেবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
নতুন এই গবেষণায় গবেষকরা আরও বেশ কিছু চমকপ্রদ বিষয় উপস্থাপন করেছেন। যেমন তারা বলছেন, বাইরে করোনা যত ছড়ায়, তার চেয়ে অনেক বেশি ছড়ায় বন্ধ ঘরের মধ্যে। খোলা জায়গায় সেই সম্ভাবনা অনেক কম। তাদের মতে, ঘন ঘন হাত ধুয়ে বা মাস্ক পরে করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে কিনা সে বিষয়েও নিশ্চয়তা নেই।
গবেষণা পত্রে তারা দেখিয়েছেন এক জন ‘সুপার স্প্রেডার’এর থেকে ৫৩ জন মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। অথচ আক্রান্ত সবাই ওই ব্যাক্তির সংস্পর্শে গেছেন এমন প্রমান পাওয়া যায়নি। তাহলে কিভাবে ছড়িয়েছে? এটাই এখন বিরাট প্রশ্ন।
ল্যানসেটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অ্যাসিম্পটোমেটিক বা প্রিসিম্পটোমেটিক করোনা আক্রান্তদের মধ্যে হাঁচি কিংবা কাশির উপসর্গ নেই। অথচ ৪০ শতাংশ ট্রান্সমিশন তাদের থেকেই হচ্ছে। এইভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পদ্ধতিকে সাইলেন্ট ট্রান্সমিশন বলে। এখন বিশ্বে বেশিরভাগ সংক্রমণ হচ্ছে এই সাইলেন্ট ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে।
এর আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ৩২টি দেশের ২শ বিজ্ঞানী বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থাকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত এবং এর স্বপক্ষে অনেক প্রমাণ রয়েছে। করোনাভাইরাসের খুবই ক্ষুদ্র একটি কণা থেকে একজন মানুষ করোনা আক্রান্ত হতে পারেন।