স্টাফ রিপোর্টার, কৈলাসহর, ১২ এপ্রিল।। ঊনকোটি জেলার কৈলাসহর এর শ্রীনাথ পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা অব্যাহত রয়েছে।পঞ্চায়েত সদস্যদের নিজেদের স্বার্থে ফের কৈলাসহরের শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে নাটক মঞ্চস্থ হলো। রাজনৈতিক ভাবে তীব্র চাঞ্চল্যের পাশাপাশি সমালোচনারও ঝড় উঠছে।
কৈলাসহর মহকুমার গৌরনগর ব্লকের অধীনে শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অবস্থিত। তেরো আসন বিশিষ্ট শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০১৯ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি দলের পঞ্চায়েত সদস্য ছয়জন, সি.পি.আই.এম দলের পঞ্চায়েত সদস্য পাঁচজন এবং কংগ্রেস দলের পঞ্চায়েত সদস্য দুইজন ।পঞ্চায়েত ত্রিশংকু হয়ে যাবার পর সিপিআইএম দলের হবিব উদ্দিন পঞ্চায়েতের প্রধান এবং কংগ্রেস দলের আব্দুল সালামকে উপ প্রধান করে কংগ্রেস এবং সিপিআইএম দুই দল যৌথ ভাবে পঞ্চায়েত গঠন করে।
কিন্তু কয়েকমাস পরে নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে সমস্যা তৈরি হওয়ায় পঞ্চায়েত ভেংগে যায়। এরপর সিপিআইএম দলের পঞ্চায়েত সদস্য তুয়াকুল আলীকে পঞ্চায়েতের প্রধান এবং বিজেপি দলের পঞ্চায়েত সদস্য সিরাজ মিঞাকে উপ প্রধান করা হয়।বিজেপি দলের মোট ছয়জন সদস্যের মধ্যে চারজন পঞ্চায়েত সদস্য এবং সিপিআইএম দলের মোট পাঁচ জন পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে চারজন পঞ্চায়েত সদস্য মিলে পঞ্চায়েত গঠন করে।
দলীয় হুইপ অমান্য করায় দুই দলের নির্দেশে গৌরনগর ব্লকের বিডিও ওদের পঞ্চায়েত সদস্য পদ খারিজ করে দেবার পর ত্রিপুরা হাইকোর্টে মামলা হয়়। এই মামলায় চলতি বছরের মার্চ মাসে হাইকোর্ট রায় দিয়ে বলে যে, সিপিআইএম দলের তুয়াকুল আলী প্রধান এবং বিজেপি দলের সিরাজ মিঞাকে উপ প্রধান পদে বহাল রেখে পঞ্চায়েত চলবে। আদালতের রায়ের পর বারো এপ্রিল দুপুরে ফের আরও এক নতুন নাটক মঞ্চস্থ হলো।
বারো এপ্রিল দুপুরে বিজেপি দলের নির্বাচিত ঊনকোটি জেলা পরিষদের সদস্য জমসেদ আলীর নেতৃত্বে শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি দলের ছয়জন পঞ্চায়েত সদস্য এবং কংগ্রেস দলের দুইজন পঞ্চায়েত সদস্য ও সিপিআইএম দলের এক সদস্য মিলে মোট নয়জন পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েতের প্রধান তুয়াকুল আলীর বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় ঊনকোটি জেলার পঞ্চায়েত দপ্তরের সহকারী অধিকর্তা সুদীপ করের কাছে। উল্লেখ্য, জেলা পঞ্চায়েত অফিসার জেলায় অনুপস্থিত থাকায় উনার পরিবর্তে জেলার পঞ্চায়েত দপ্তরের সহকারী অধিকর্তা সুদীপ কর এই অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেেন।
অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেবার পর সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে জেলা পরিষদের সদস্য জমসেদ আলী বলেন যে, পঞ্চায়েতের উন্নয়নের স্বার্থে এবং গরীব দুঃস্থ মানুষদের সরকারি সুযোগ সুবিধা দেবার জন্যই প্রধান তুয়াকুল আলীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে।
জমসেদ আলী আরো বলেন, সিপিআইএম দলের হবিব উদ্দিন, কংগ্রেস দলের আব্দুল সালাম, আজিরুন নেছা বেগম, বিজেপি দলের ইনুছ আলী, সিরাজ মিঞা, রীনা দেব, রীনা শুক্ল বৈদ্য,পম্পা দেবনাথ, আসব আলী এই নয়জন পঞ্চায়েত সদস্যের স্বাক্ষরিত অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত পরিচালনা করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। পঞ্চায়েত এলাকার জনগণ জরুরি প্রয়োজনেও পঞ্চায়েত থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।