অনলাইন ডেস্ক, ২৯ মার্চ।। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের সূচনা ঘটলো চীন ও ইরান কাছাকাছি আসার মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের পৃষ্ঠপোষকতায় মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় কয়েকটি দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কের উন্নয়নের মাধ্যমে যে ‘শক্তির বলয়’ তৈরি হয়েছিল, চীন-ইরান মৈত্রীর ফলে সেখানে ‘শক্তির ভারসাম্য’ ফিরে এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকগণ।
২০২০ সালের শুরুর দিকে মার্কিন আক্রমণে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক নেতা জেনারেল সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর অনেকদিন চুপ থাকে ইরান। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল-সৌদি জোটের শক্তি ও শত্রুতা বৃদ্ধিতেও ইরান প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রয়া জানায় নি।
কিন্তু চলতি ২০২১ সালের মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি যখন রাজধানী তেহরানে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ইয়ে ও তার দলবলকে স্বাগত জানান, তখন চীন-ইরান নিকটবর্তী হওয়ার তথ্য প্রকাশ্যে চলে আসে। ইরানের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে চীনের প্রথম আনুষ্ঠানিক উপস্থিতির ঘটনাকে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকগণ খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন।
বিশেষ করে, ইরানে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের ২৫ বছর মেয়াদি চীনা বিনিয়োগকে অত্যন্ত তাৎপর্যযুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। ইরান এই বিনিয়োগের অর্থ পাবে তেলের বিনিময়ে। আন্তর্জাতিক অবরোধে আক্রান্ত ইরানের পক্ষে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ ছিল সীমিত।
চীন তেলের বিনিময়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করে দৃশ্যত ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন মিত্র পক্ষের অবরোধ ও আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার প্রচেষ্টাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করলো।
ইতিমধ্যে আফ্রিকার অনেক দেশে বিরাট বিনিয়োগ করার মাধ্যমে চীন নিজের অবস্থান দৃঢ় করেছে। এবার ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক নিবিড় করে মধ্যপ্রাচ্য ও পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করলো চীন।
ধারণা করা হচ্ছে, চীন নিজের যোগাযোগ পথগুলোকে উন্মুক্ত রাখতে এবং বৈশ্বিক আর্থিক লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিনীদের পেছনে ফেলতে ইরানকে বেছে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যেতে চাচ্ছে।