প্রাক্তন বিশ্ববিদ্যালয় মন্ত্রী জো জনসনের নেতৃত্বে কিংস কলেজ লন্ডনের পলিসি ইনস্টিটিউট এবং হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে চীন এবং ব্রিটেনের যৌথভাবে লেখা গবেষণাপত্রের সংখ্য ১৬ হাজার ২শ’ ৬৭টি যা ১৯৯০ সালে ছিল ১শ’রও কম। এটি ব্রিটেনের প্রকাশিত মোট গবেষণাপত্রগুলোর প্রায় ১১ শতাংশ, যেখানে আমেরিকার সাথে এবং জার্মানির সাথে দেশটির যৌথ গবেষণা পত্রের সংখ্যা যথাক্রমে ১৯ শতাংশ এবং প্রায় ১০.৫ শতাংশ। টেলিযোগাযোগ, ন্যানো টেকনোলজি এবং বায়োকেমিস্ট্রি মতো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে গবেষণায় এ গভীর সহযোগিতার উল্লেখযোগ্য অনুপাতটি নতুন এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক প্রযুক্তি, পণ্য এবং পরিষেবাদি তৈরির সম্ভাবনাপূর্ণ।
চীনের সাথে ব্রিটেনের গবেষণা এবং উন্নয়ন সংহতকরণের এ চিত্র বাকিদের জন্য উদ্বেগের কারণ হলেও চীন ব্রিটেনে বিদেশী শিক্ষার্থীদের একক বৃহত্তম সরবরাহকারী। চীন থেকে আগত ২০১৮-’১৯ সালে সব স্তরের শিক্ষা সংক্রান্ত শিক্ষার্থীদের হার ৩৫ শতাংশ। ব্রিটেনের হাইয়ার এডুকেশন পলিসি ইনস্টিটিউট (এইচপিআই) বলছে যে, ২০১৫-’১৬ সালে ইরোপিয়ান ইউনিয়নের বাইরে থেকে ব্রিটেনে আসা একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর দেশটির অর্থনীতিতে সামগ্রিক অবদান ছিল ১ লাখ ২ হাজার পাউন্ড (বর্তমানে ১ লাখ ১৫ হাজার ৬শ’ ৪০ পাউন্ড)।
২০১৯ সালে চীনের সাথে শিক্ষা রফতানি করে ব্রিটেনের উচ্চশিক্ষা রফতানি খাতে আয় ছিল ৩.৭ বিলিয়ন পাউন্ড। দেশটি চীন থেকে আগত খন্ডকালীন শিক্ষার্থী, বেসরকারী বিদ্যালয়গুলোতে চীনের শিক্ষার্থী এবং চীনে ব্রিটিশ বেসরকারী বিদ্যালয়গুলোসহ ব্রিটিশ শিক্ষার সামগ্রিক রফতানি মূল্য আরও অনেক বেশি। চীন থেকে আসা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক গবেষণাগুলোতে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ব্রিটেনের সহযোগিতা এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন ব্রিটেনের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে লাভজনক। বর্তমানের ক্রমবর্ধমান বৈশি^ক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে চীনের এই সাফল্য বিটেনের শিক্ষাখাতে আয়ের তালিকার শীর্ষস্থানে থাকা আমেরিকার জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। আমেরিকা-চীন দ্ব›দ্ব যেমন বাড়ছে, তেমনি এই দু’দেশের মাঝখানে ব্রিটেনের অবস্থানও ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। চীনের সাথে এ যৌথ সহযোগিতার সুবিধা এবং এর ঝুঁকির মধ্যে তাই নিঃসন্দেহে একটি উত্তেজনা বিরাজমান থাকবে।