এক বিবৃতিতে এই ভ্যাকসিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তাদের টিকার সাথে রক্ত জমাটের ঝুঁকি বাড়ার কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। ইউরোপে এক কোটি ৭০ লক্ষ মানুষের মধ্যে মাত্র ৩৭টির মত রক্ত জমাটের ঘটনা ঘটেছে, এবং যারা এই টিকা নেয়নি তারাও একই সময়ে সমান সংখ্যায় রক্ত জমাটের শিকার হয়েছে। কোম্পানির প্রধান মেডিকেল অফিসার অ্যান টেইল বলেন, ইউকে এবং ইইউতে প্রায় এক কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই আমাদের টিকা নিয়েছেন। এমনিতেই শত শত মানুষ স্বাভাবিক সময়েই রক্ত জমাটের শিকার হন।
সেই তুলনায় ভ্যাকসিন নেওয়া মানুষদের মধ্যে রক্ত জমাটের সংখ্যা অনেক অনেক কম। তিনি বলেন, মহামারির কারণে বিচ্ছিন্ন প্রতিটি ঘটনার ওপর এখন নজর অনেক বেশি, এবং মানুষের নিরাপত্তার জন্য অনুমোদিত ভ্যাকসিনের প্রতিক্রিয়ার ওপরও স্বাভাবিক এবং প্রচলিত নজরদারির চেয়ে অনেক বেশি নজরদারি হচ্ছে। নরওয়ে এবং ডেনমার্কে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়া প্রায় ৪০ জনের শরীরে রক্ত জমাটের খবরের পর এই টিকার সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নেদারল্যান্ডস সরকার জানিয়েছে, সাবধানতার জন্য আপাতত ২৯শে মার্চ পর্যন্ত এই টিকা দেওয়া স্থগিত থাকবে।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী উগো দ্য জং এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো সন্দেহ দেখা দিলে তা আমরা অগ্রাহ্য করতে পারি না। আমাদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, সুতরাং এই টিকা আপাতত স্থগিত রাখা সঠিক এবং সুচিন্তিত।’ অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, রক্ত জমাটের ওই সব ঘটনার সাথে এই টিকার যোগসূত্রের কোনো প্রমাণ নেই। ইউরোপের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইমা রক্ত জমাট বাধার ঘটনাগুলো তদন্ত করছে।
ইমা বলেছে, এই টিকা নেওয়ার সুফল সম্ভাব্য ঝুঁকির চেয়ে অনেক বেশি। ব্রিটেনের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার কারণেই যে রক্ত জমাটের ঘটনা ঘটেছে তার কোনো প্রমাণ নেই। ব্রিটিশ নাগরিকদের উদ্দেশ্যে তারা বলেছে যে ডাক পেলেই যেন তারা টিকা নিয়ে নেয়। ব্রিটেনে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ভুক্ত দেশগুলোতে এখন পর্যন্ত প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার অন্তত একটি ডোজ নিয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ৬৫টি দেশ এবং অঞ্চলে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকোর এই টিকা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের মত কিছু জায়গায় শুধু এই টিকাটিই ব্যবহার করা হচ্ছে।