স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২ মার্চ।। ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের নির্বাচন আগামী ৪ এপ্রিল, ২০২১ অনুষ্ঠিত হবে৷ এই নির্বাচনের জন্য আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি হবে আগামী ৪ মার্চ, ২০২১৷ আজ বিকেলে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্টেট ইলেকশন কমিশনার ফর ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল মানিকলাল দে নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা করেন৷ নির্ঘন্ট অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হচ্ছে ১২ মার্চ ২০২১৷ মনোনয়নপত্রগুলি পরীক্ষা করে দেখা হবে ১৫ মার্চ, ২০২১৷
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ মার্চ, ২০২১৷ ৪ এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৭টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হবে এবং তা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত৷ যদি পুনরায় ভোটগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় তবে পুনরায় ভোটগ্রহণের দিন ধার্য হয়েছে ৭ এপ্রিল, ২০২১৷ ভোট গণনা হবে ৮ এপ্রিল, ২০২১৷
ওইদিন সকাল ৮টা থেকে ভোট গণনা শুরু হবে৷ ১৩ এপ্রিল, ২০২১-র মধ্যে সমস্ত নির্বাচনী প্রক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন করা হবে৷ ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই এডিসি এলাকায় আদর্শ আচরণবিধি লাগু হয়ে গেছে৷ স্টেট ইলেকশন কমিশনার ফর ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল মানিক লাল দে জানিয়েছেন, সুুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচনের জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশন থেকে প্রয়োজনীয় সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷
৮ জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তাগণ হচ্ছেন ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসার (ডি ই ও)৷ এডিসি এলাকার অন্তর্ভক্ত ১৬টি মহকুমার মহকুমা শাসকগণ রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন৷ তিনি জানান, স্বশাসিত জেলা পরিষদের মূল নির্বাচন ক্ষেত্র ২৮টি৷ এরমধ্যে ২৫টি নির্বাচনী ক্ষেত্র তপশিলি উপজাতি সংরক্ষিত৷ বাকি ৩টি অসংরক্ষিত৷
এবছর জেলা পরিষদের নির্বাচনে ৮ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪১ জন ভোটার রয়েছেন৷ এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫৪৮ জন এবং মহিলা ভোটার ৪ লক্ষ ২৮ হাজার ৪৯০ জন৷ অন্যান্য ৩ জন৷ সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছেন ২২ কাঁঠালিয়া-মির্জা-রাজাপুর তপশিলি উপজাতি সংরক্ষিত কেন্দ্রে৷ ঐ কেন্দ্রে মোট ভোটার ৪১ হাজার ১৪৭ জন৷ সবচেয়ে কম ভোটার রয়েছেন ১৮ টাকারজলা-জম্পইজলা এস টি নির্বাচনী ক্ষেত্রে৷ ঐ কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৯ হাজার ৮৫৮ জন৷
কোভিড পরিস্থিতির কারণে এবারের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে৷ মোট ১,২৪৪টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে৷ গড়ে প্রায় এক হাজার ভোটার নিয়ে এক একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র করা হয়েছে৷ পূর্বে যেখানে প্রায় ১,২০০ ভোটার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোট দিতে পারতেন৷ ভোটগ্রহণ হবে ই ভি এম-এর মাধ্যমে৷
এক্ষেত্রে কোনও ভিভিপ্যাটের ব্যবস্থা থাকবে না বলে নির্বাচন কমিশনার শ্রী দে জানান৷ মনোনয়নপত্র জমা, পরীক্ষা নিরীক্ষা, প্রত্যাহার এবং ভোটগণনা সমস্ত প্রক্রিয়ারই ভিডিওগ্রাফির ব্যবস্থা থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন৷ তিনি জানান, সমস্ত রিটার্নিং অফিসার অর্থাৎ ১৬টি মহকুমা সদরে ৮ এপ্রিল সকাল ৮টা থেকে ভোট গণনা শুরু হবে৷
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরও জানান, অবাধ ও সুুষ্ঠভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যে কমিশন পৃথক পৃথকভাবে জাতীয় এবং রাজ্য স্তরীয় স্বীক’ত রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছে৷ প্রত্যেকটি দলই তাদের মতামত রাখার পাশাপাশি কমিশনকে সুুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচনের স্বার্থে সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন৷
নির্বাচন কমিশনার শ্রীদে আরও জানান আরক্ষা প্রশাসনও প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করতে প্রয়োজনীয় সমস্ত উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছে৷ ইতিমধ্যে ২৭৪ জন সেক্টর ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে৷ পাশাপাশি সম সংখ্যক পুলিশ সেক্টর অফিসার দায়িত্বে থাকবেন৷
এছাড়াও ১৭ জন রাজ্য প্রশাসনের সিনিয়র গ্রেড অফিসার নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন৷ তিনি জানান, কোভিড-১৯ গাইডলাইন মান্য করা হবে৷ সেই অনুসারে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীর সঙ্গে সর্বাধিক ২ জন থাকতে পারবেন এবং ২টি হালকা যান ব্যবহার করতে পারবেন৷
মনোনয়নপত্র অনলাইনে স্টেট ইলেকশন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে এবং তা যথাযথভাবে পূরণ করে স্বশরীরে প্রার্থী রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে পারবেন৷ তবে কেউ ইচ্ছা করলে রিটার্নিং অফিসারের অফিস থেকেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন৷ ভোটার তালিকায় নথিবদ্ধ থাকা প্রত্যেক ভোটারকে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে যাওয়ার সময় সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে যেতে হবে।
এই নির্বাচনপর্ব সুুষ্ঠ, অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রার্থী, রাজনৈতিক দল এবং জনগণের একান্ত সহযোগিতা কামনা করেছে রাজ্যের নির্বাচন কমিশন৷ পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও রাজস্ব দপ্তর যৌথভাবে যে কোভিড গাইডলাইন প্রণয়ন করেছেন তা যথাযথভাবে মেনে চলতেও নির্বাচন কমিশন আহ্বান রেখেছে৷
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক ভোটারকে তাদের মতাধিকার প্রয়োগ করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে৷ সাংবাদিক সম্মেলনে ইলেকশন কমিশনার ফর ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের সচিব প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য এবং রাজ্য পুলিশের আই জি জি এস রাও উপস্থিত ছিলেন৷