বাংলাদেশের পাশাপাশি পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় যারা ভাষা আন্দোলনে আত্মবলিদান করেছেন তাদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে হবে৷ এছাড়া প্রত্যেক জাতিকে তাদের নিজ নিজ মাতৃভাষার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে৷ নিজের মাতৃভূমি, সংস্কৃতি ও মাতৃভাষাকে যেমন আমরা ভালোবাসি ও শ্রদ্ধা করি ঠিক তেমনি অন্যের ভাষাকেও সম্মান করতে হবে৷ মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করে কোনও জাতি পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না৷ প্রতিটি জাতির রক্তের বাধনে বাঁধা আছে তাদের নিজ নিজ মাতৃভাষা৷ মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার হচ্ছে শিশুর জন্মগত অধিকার৷
প্রতিটি জাতিকে তার নিজের ভাষাকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলতে হবে এবং অন্যের ভাষার প্রতি যোগ্য মর্যাদা দিয়ে সম্মান দিতে হবে৷ শিক্ষামন্ত্রী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা উল্লেখ করে বলেন একটি শিশুর ক্ষেত্রে মায়ের দুধের যেমন বিকল্প নেই, তেমনি প্রতিটি মানুষের মাতৃভাষা ছাড়া তার পরিচয় নেই৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে বাংলা ভাষার সাথে ককবরক ভাষাও রয়েছে৷ জনজাতিদের উন্নতি সাধনে সরকার বদ্ধপরিকর৷ জনজাতিদের রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ককবরক ভাষা সাহিত্য প্রকাশনা ও গবেষণা কেন্দ্রের মাধ্যমে ককবরক ভাষার আরও বিকাশে চেষ্টা করতে হবে৷
ত্রিপুরায় জডিশিয়াল সার্ভিস ও টেট পরীক্ষায় বাংলা ভাষার সাথে ককবরক ভাষাকে যুক্ত করা হয়েছে৷ বিলুপ্ত ভাষাগুলির কৃষ্টি, সংস্কৃতি রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে৷ বিধায়ক ডা. দিলীপ দাস বলেন, ২১ ফেবয়ারি শুধু মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন না করে সকল ভাষাভাষির মানুষকে সম্মান করে নিজ নিজ ভাষাকে সমৃদ্ধ করে তুলতে হবে৷ মাত’ভাষা মাতৃদুগ্দের সমান, মাকে সম্মান করলে মাত’ভাষাকে সম্মান করা হয়৷
ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে নিজ নিজ ভাষার প্রতি সম্মান প্রদান ও সকলকে দায়িত্ববান হতে হবে৷ অনুষ্ঠানে পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা সরকার (দেব) বলেন, ইংরেজি ভাষার দিকে ধাবিত না হয়ে ছেলেমেয়েদের নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি ধরে রেখে নিজ নিজ মাতৃভাষার প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ হতে হবে৷
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস৷ অনুষ্ঠানে সুুখময় দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুুতপা দাস, সমাজসেবী প্রদ্যৎ ধর চৌধুরী সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন৷