বন দপ্তরকে এখন পরিকল্পনা নিতে হবে যাতে জনগণের দ্রত রোজগারের সুুযোগ সৃষ্টি হয় : মুখ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৮ ফেব্রুয়ারি৷৷ রাজ্যের বনজ সম্পদকে ভিত্তি করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে আরও কিভাবে সুুদৃঢ় করা যায় সেই দিকে লক্ষ্য রেখে বন দপ্তরকে সুুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে৷ জনকল্যাণে এই উন্নয়নমূলক কর্মসূচির সুুফল দ্রততার সাথে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে৷ বন দপ্তরকে এখন পরিকল্পনা নিতে হবে যাতে জনগণের দ্রত রোজগারের সুুযোগ সৃষ্টি হয়৷ আজ সচিবালয়ের ২নং সভাকক্ষে বন দপ্তরের পর্যালোচনা সভায় একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷

পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বন সম্পদ উন্নয়নে বন দপ্তরের অধীনে যে সকল এজেন্সিগুলি রাজ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করছে তাদের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের মানুষের দ্রত রোজগার সৃষ্টির ক্ষেত্রে বন দপ্তরকে আরও উদ্যোগী হতে হবে৷ বনজ সম্পদ মূলত বাঁশের বোতল, আঁদা, গোলমরিচ, ফুলঝাড় উৎপাদন কিভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায় এবং তার বাজারজাতকরণের মাধ্যমে মানুষের কর্মসংস্থানের সুুযোগ সৃষ্টি করার যায় সেই দিকে লক্ষ্যে রেখে বন দপ্তরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে৷

এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে ইন্দো-জার্মান প্রকল্পে রূপায়িত কর্মসূচিগুলির মধ্যে গোলমরিচ, আঁদা, ফুলঝাড়, বাঁশের বোতল তৈরি ইত্যাদি বিষয়গুলি অন্তর্ভক্ত করার জন্য পরামর্শ দেন৷ পাশাপাশি বাঁশের তৈরি আগরবাতিকেও ইন্দো-জার্মান প্রকল্পে অন্তর্ভক্ত করার উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচিগুলি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে রাজ্যে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুুযোগ সৃষ্টি হবে৷ আগর গাছকে ভিত্তি করে রাজ্যের অর্থনৈতিক বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে৷ এজন্য আগরকে ভিত্তি করে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনাময় বাজার সহ সামগ্রিক দিকগুলি বিবেচনা করে একটি বিস্তারিত প্রজেক্ট রিপোর্ট বন দপ্তরকে তৈরি করতে হবে৷

প্রয়োজনে আগরকে ভিত্তি করে পৃথক প্রকল্প তৈরি করতে হবে৷ তিনি আরও বলেন, রাজ্যে বন্যপ্রাণীকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে৷ দেশ-বিদেশের প্রক’তিপ্রেমী পর্যটকদের আক’ষ্ট করতে বণ্যপ্রাণীভিত্তিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেছেন৷ পর্যালোচনাসভায় প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক ড. ডি কে শর্মা বন দপ্তরের বিভিন্ন কাজকর্মের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন৷ বন দপ্তরের নতুন উদ্যোগ, কর্মপরিকল্পনা, লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত সাফল্য, সেক্টর ভিত্তিক কর্মসূচি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়৷ তাছাড়াও বন দপ্তরের পূর্ববর্তী পর্যালোচনা সভায় গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরেন প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক৷ সভায় আগর চাষের বাণিজ্যিক সম্ভাবনাময় বাজার সহ বাণিজ্যিক দিকগুলি নিয়ে আলোচনা হয়৷

সভায় প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক ড. ডি কে শর্মা রাজ্যে ইকো ট্যুরিজমের উন্নয়নের উপর আলোকপাত করে জানান, তৃষ্ণা অভয়ারণ্যের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ চলছে৷ পাশাপাশি পর্যটনের বিকাশে বন্যপ্রাণীকে কেন্দ্র করে ত্রিপুরার বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হবে৷ পর্যালোচনা সভায় প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক জানান, অর্থকরী কাঠ যেমন সেগুন, গামাই কাঠ উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩০০ হেক্টর এলাকায় বনায়নের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ পাহাড়ি দূরবর্তী অ’লে সিডবল পদ্ধতির মাধ্যমে করই, আমলকি, সুুন্ধি ইত্যাদি বনায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এবছর রাজ্যে ২০০ হেক্টর এলাকায় এই পদ্ধতিতে বনায়ন করা হবে৷

তিনি আরও জানান, তেলিয়ামুড়াকে ওয়াইল্ড লাইফ ক্যাপিটেল হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ সভায় প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক আরও জানান, জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটি ও স্বসহায়ক দলগুলি রাজ্যের ৩৬টি ব্লকের ৭৫৭টি চেকড্যামে মৎস্য চাষে যুক্ত রয়েছে৷ এই চেকড্যাম মনিটরিং-এর জন্য অরণ্য জল দর্পণ নামে একটি অ্যাপ চালু করা হয়েছে৷ সভায় বনে উৎপন্ন কলা গাছ থেকে ফাইবার বের করার বিষয়টিও আলোচনায় প্রাধান্য পায়৷ পর্যালোচনা সভায় প্রদত্ত তথ্যে জানা যায় ইন্দো জার্মান ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের অধীন রাজ্যে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ৬০০ হেক্টর বনায়ন করার পাশাপাশি ২০টি চেকড্যাম তৈরি করা হবে৷ পর্যালোচনাসভায় এছাড়াও বনজ সম্পদ এবং বণ্যপ্রাণী সুুরক্ষায় বন বন্ধ মোবাইল অ্যাপ, লাইট ডিটেকশন অ্যাণ্ড র্যাি’ং সার্ভে, প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়৷

এছাড়াও সভায় বন মিত্রের মাধ্যমে নিয়োজিত কর্মী নিযুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়৷ সভায় প্রদত্ত তথ্যে জানা যায় চলতি মাসের ২১ ফেবয়ারি হাথাইকতর (বড়মুড়া) ইকো পার্কে হর্নবিল উৎসব অনুষ্ঠিত হবে৷ তাছাড়াও সভায় বন দপ্তরের রূপায়িত অন্যান্য কর্মসূচিগুলি আলোচনায় উঠে আসে৷ পর্যালোচনা সভায় বনমন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া, মুখ্য সচিব মনোজ কুমার, বিদ্যৎ দপ্তরের প্রধান সচিব এস আর কুমার, মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান সচিব জে কে সিনহা সহ বন দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ প্রমুখ উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন৷

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?