অনলাইন ডেস্ক, ৯ ফেব্রুয়ারী।। সোমবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপরে ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই সময়ই তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের করা মন্তব্য নিয়ে তীব্র হইচই শুরু হয় সংসদে। সংসদে দাঁড়িয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য বিপাকে পড়তে পারেন মহুয়া।
সূত্রের খবর, তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে অবমাননাকর মন্তব্য করার জন্যই কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ করা হতে পারে।
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ শুরু করেন মহুয়া। তিনি অভিযোগ করেন, বিরোধী কণ্ঠকে চুপ করাতে ঘৃণা এবং প্রতিশোধস্পৃহার পথে হাঁটছে সরকার। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি দেশের বিচারব্যবস্থা এবং সংবাদমাধ্যমকেও কাঠগড়ায় তোলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ।
মহুয়া বলেন, “ভারতের দুর্ভাগ্য হল যে শুধু দেশের সরকার নয়, বিচারব্যবস্থা এবং সংবাদমাধ্যমের মতো গণতন্ত্রের অন্যান্য স্তম্ভগুলিও ব্যর্থ হয়েছে। বিচারব্যবস্থার পবিত্রতাও নষ্ট হয়েছে।
যেদিন দেশের প্রধান বিচারপতি নিজের পদে থাকাকালীনই যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত হয়ে নিজেই নিজের বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হয়েছিলেন এবং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করে অবসরের তিন মাসের মধ্যে জেড প্লাস নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন, সেদিনই বিচারব্যবস্থা তার পবিত্রতা হারিয়েছিল।”
মহুয়া আরও বলেন, “সংবিধানের মূল ভিত্তিগুলিকে রক্ষা করার সুযোগ পেয়েও যখন বিচারব্যবস্থা তা করেনি, তখনও তার পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে।”
এ বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, বক্তব্যে কারও নাম নেননি মহুয়া মৈত্র। শেষ পর্যন্ত মহুয়া মৈত্রকে তাঁর বক্তব্য শেষ করার অনুমতি দিলেও প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বা সেই সংক্রান্ত কোনও মন্তব্য করতে নিষেধ করেন অধ্যক্ষ।
এদিকে মহুয়ার আপত্তিকর মন্তব্য সংসদের কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে সরব হন বিজেপি সাংসদরা। অধ্যক্ষের চেয়ারে থাকা আরএসপি সাংসদ এন কে প্রেমচন্দ্রনও বলেন, মহুয়ার বক্তব্য আপত্তিকর বলে প্রমাণিত হলে তা কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হবে।
অন্যদিকে মহুয়ার বক্তব্য চলাকালীনই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল এবং বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে উঠে দাঁড়িয়ে তার তীব্র প্রতিবাদ করেন।
তাঁরা অভিযোগ করেন, আগে থেকে নোটিস না দিয়ে এভাবে সংসদে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে আলোচনা করা যায় না। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে মহুয়ার মন্তব্যকে ‘লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেন অর্জুন রাম মেঘওয়াল।