আজ মহাকরণের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ এ সংবাদ জানিয়েছেন৷ তিনি আরও জানান, অন্তবর্তীকালীন মূল্যায়নে যদি দেখা যায় করোনা অতিমারির কারণে কোন ছাত্রছাত্রীদের দূর্বলতা রয়েছে তাহলে বার্ষিক পরীক্ষার আগে বিশেষ কোচিং-এর মাধ্যমে তাদের তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে৷
৮-১৩ ফেবয়ারি অন্তবর্তীকালীন মূল্যায়নের সময় সকল ছাত্রছাত্রীদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার জন্য আবেদন জানান শিক্ষামন্ত্রী৷ তিনি আরও বলেন, যদি কোন ছাত্রছাত্রী ঐ নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যালয় উপস্থিত থাকতে না পারে তাহলে মপ-আপ রাউণ্ডে ১৫-২০ ফেবয়ারির মধ্যে তাদের মূল্যায়ন করা হবে৷
এছাড়া ১৪ ফেবয়ারি রাজ্যের বিভিন্ন সুকলে শিক্ষক-অভিভাবক সভার আয়োজন করা হবে৷ শিক্ষামন্ত্রী জানান, রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রটিকে উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষা দপ্তর অনেকগুলি সংস্কার করেছে৷ এরমধ্যে অন্যতম একটি হল নতুন দিশা৷ পাশাপাশি বর্তমান রাজ্য সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজ্যের ছেলেমেয়েদের গুণগত শিক্ষা প্রদানে বহুবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে৷
রাজ্যের শিক্ষার্থীদের শ্রেণীগতমান কোথায় রয়েছে তা জানার জন্য ২০১৯ সালের ফেবয়ারি মাসে ত’তীয় থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটা সার্ভে করা হয়েছিল৷ ঐ সার্ভেতে দেখা গেছে যে ত’তীয় থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা গড়ে ৪৩.২২ শতাংশ রিডিং পড়তে পারবে এবং প্রাথমিক সংখ্যা সম্পর্কে জ্ঞান ছিল ১৯.০২ শতাংশ ছাত্রছাত্রীর৷
পরবর্তী সময়ে তাদের জন্য নতুন দিশা নামে প্রকল্পের মাধ্যমে বিশেষ কোচিং-এর ব্যবস্থা করেছে শিক্ষা দপ্তর৷ ফলে ২০২০ সালের বার্ষিক পরীক্ষায় দেখা গেছে তৃতীয়-অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের রিডিং পড়ার দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৯৩.৬৯ শতাংশ এবং প্রাথমিক সংখ্যার জ্ঞান বৃদ্ধি পেয়ে ৮৮.২৭ শতাংশ হয়েছে৷
রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ অভিভাবকদের পরিশ্রমের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে শিক্ষামন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন৷ শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে আরও বলেন, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা পারফরম্যান্স গ্রেড ইনডেক্স র্যাঙ্কিং-এ বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে৷
তিনি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে পি জি আই র্যাঙ্কিং-এ রাজ্য গ্রেড-৫ এ ছিল, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে গ্রেড-৩ এ ছিল এবং ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা পি জি আই র্যাঙ্কিং-এ গ্রেড-১ এ উঠে এসেছে৷ আগামীদিনে শিক্ষাক্ষেত্রে পারফরম্যান্স গ্রেড ইনডেক্স-এর সবগুলি সূচকে সাফল্য অর্জন করার জন্য শিক্ষা দপ্তর পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানান৷
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ২০০৭ সালে রাজ্যের ৪০০টি বিদ্যালয়ে ইনফরমেশন কমিউনিকেশন এবং টেকনোলজি (আই সি টি) নামে একটা প্রোজেক্ট নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু কাজ যথাযথ হয়নি৷ ২০২১-২২ অর্থবছরের এপ্রিল মাস থেকে ৩৬৫টি বিদ্যালয়ে প্রোজেক্ট পুনরায় চালু করা হবে৷
এছাড়া রিডিং-এর জন্য এফ এল এন অর্থাৎ ফাউণ্ডেশন্যাল লিটারেসি নিউমেরেসি চালু করা হবে৷ বিজ্ঞান ও অঙ্কে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আরও এগিয়ে যাবার জন্য ১৫০০ টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হবে৷ তিনি জানান, আণ্ডার গ্র্যাজয়েট টিচার নিয়োগের জন্য টি আর পি টি’র কাছে ১৬৭৬ জনের নাম শিক্ষা দপ্তর চেয়েছিল৷ টি আর পি টি দেয় ৫৭১ জনের নাম৷ এরমধ্যে অফার ছাড়া হয়েছে ৩২৬ জনের মধ্যে৷ ২৪৫ জনের জন্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত লাগবে৷ এছাড়া ২০৫৫ জন গ্র্যাজয়েট টিচারের নাম চাওয়া হয়েছে৷ টি আর পি টি দেয় ৮৯৭ জনের নাম৷ অফার দেওয়া হয়েছে ৪৯৪ জনকে৷ অবশিষ্ট ৪০৩ জনের জন্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত লাগবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন৷