ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ইসরায়েল ইতিমধ্যে এক–চতুর্থাংশের বেশি জনগণকে অন্তত এক ডোজ করে টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে, যা জনসংখ্যার অনুপাতে বিশ্বে সর্বোচ্চ।
ইসরায়েলর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, তারা ১৯ ডিসেম্বর থেকে টিকা দেওয়া শুরু করেছে। এরই মধ্যে ৯০ লাখ জনগোষ্ঠীর ইসরায়েলে এক-চতুর্থাংশের বেশি মানুষ ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন।
শুরুতেই বয়স্ক ও সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে টিকা দেওয়া হয়। এখন ৪০ বা তারও বেশি বয়সের ব্যক্তিরা টিকা নিতে পারছেন।
এদিকে ইসরায়েল পশ্চিম তীর ও গাজায় সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ৫ হাজার টিকা পাঠাবে বলে জানিয়েছে। ইসরায়েলের অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে সব ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে টিকা দেওয়ার কথা।
এর মধ্যে ফিলিস্তিনির ছয়টি হাসপাতালে কাজ করা স্বাস্থ্যকর্মীরাও রয়েছেন। তাদের অনেকেই পশ্চিম তীর ও গাজা থেকে আসেন।
কারণ, এই ব্যক্তিরা ইসরায়েলে বিশেষ অনুমতিপ্রাপ্ত। তারা ইসরায়েলকে কর দেন। তাই তারা দেশটির স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ-সুবিধা পান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেমে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯০০ জনের বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হন।
এর মধ্যে ২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনা শনাক্তের তুলনায় মৃত্যুহার ১ দশমিক ১ শতাংশ। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, ইসরায়েলে মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
পশ্চিম তীরের একাংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের হাতে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা চারটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে টিকার বিষয়ে চুক্তি করছে। এর মাধ্যমে ৭০ শতাংশের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে।
তবে কবে নাগাদ এ টিকা আসবে, তা স্পষ্ট নয়। তবে রাশিয়ার তৈরি টিকা স্পুটনিক–ভির ৫ হাজার ডোজ দ্রুতই আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ইসরায়েলও ফিলিস্তিনকে ৫ হাজার ডোজ টিকা দেবে বলে জানিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে কোভাক্স স্কিমের আওতায় প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ টিকা পেতে পারেন বলে আশা করছেন ফিলিস্তিনবাসী।
ডাব্লিউএইচওর উদ্যোগে গঠিত হয়েছে ‘কোভাক্স গ্লোবাল ভ্যাকসিন ফ্যাসিলিটি’। গরিব দেশগুলো যারা নিজেদের জন্য পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহ করতে পারবে না, তাদের জন্য আন্তর্জাতিক এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিবিসিকে জানিয়েছে, কোভাক্স স্কিমের আওতায় ফিলিস্তিন যে টিকা পাবে, তা গাজা ভূখণ্ডে পাঠানো হবে। তবে টিকা পাঠাতে ওই এলাকায় ইসরায়েল ও মিসরের আরোপিত বিধিনিষেধের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
২০০৭ সালে ফিলিস্তিনের কট্টরপন্থী সংগঠন হামাস এই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে ইসরায়েল ও মিসর অবরোধ আরোপ করে। তবে হামাস কাতার থেকে টিকা পাচ্ছে বলে জানা গেছে।
কয়েকজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, ফিলিস্তিনে করোনার টিকাদান কর্মসূচি না চালালে ইসরায়েলে এই মহামারির বিস্তার ঠেকানো যাবে না। কারণ, নানা কারণে দুই ভূখণ্ডের মানুষকে একসঙ্গে থাকতে হয়।