স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৩০ জানুয়ারি।। আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ে তুলতে প্রকৌশলীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে৷ প্রকৌশলীগণ একটা রাজ্যের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা নিয়ে থাকেন৷ আজ সন্ধ্যায় নজরুল কলাক্ষেত্রে স্টেট ইঞ্জিনীয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের দু’দিনব্যাপী ৫২তম বার্ষিক সাধারণ সম্মেলনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এই কথা বলেন৷
সম্মেলনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৌশলীদের সততা ও নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করতে হবে৷ কেননা প্রকৌশলীদের ছাড়া আত্মনির্ভর ভারত ও আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ে উঠতে পারেনা৷ প্রকৌশলীদের মেধা আছে৷
কৃষি, প্রাণী সম্পদ, সেচ, মৎস্যচাষ, পরিকাঠামো উন্নয়ন, ফল ও সব্জিচাষ, উচু ভবন নির্মাণ, বিদ্যৎ সম্পসারণের ক্ষেত্রে প্রকৌশলীদের ভূমিকা রয়েছে৷ তাদের ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়৷ কিন্তু বিগত সরকার তাদের সঠিকভাবে কাজে লাগায়নি৷ কাজের জন্যে আশানুরূপ পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি৷ আজ কাজের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷
তাই প্রকৌশলীদের গুণমান বজায় রেখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে হবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আত্মনির্ভর ভারত গড়ার ডাক দিয়েছেন৷ আত্মনির্ভর ভারত গড়তে হলে কৃষি, উদ্যানচাষ, মৎস্যচাষ, রাস্তাঘাট নির্মাণ, দালান নির্মাণ, ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনের পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকৌশলীদের ছাড়া সম্ভব নয়৷
সরকার প্রকৌশলীদের সহায়তায় শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে৷ তিনি বলেন, অটল জলধারা মিশনে আগামী ২০২২ সালের মধ্যে রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাজ্যে মাত্র ৩ শতাংশ বাড়িতে পানীয়জলের সংযোগ ছিল৷
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এখন রাজ্যে ২২ শতাংশ বাড়িতে পানীয়জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৯ সালে জল জীবন মিশন চালু করেছেন৷ তাছাড়া গড়ে তুলেছেন দক্ষতা উন্নয়ন মন্ত্রক৷ এর আগে দেশের কোন প্রধানমন্ত্রী এ ধরণের উদ্যোগ নেননি৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার রাজ্যের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে৷ ২০১৭ সালে রাজ্যে কৃষিক্ষেত্রের বিকাশের হার ছিল ৫.৪ শতাংশ৷ এখন এই বিকাশের হার হয়েছে ১৩.৭৭ শতাংশ৷ রাজ্যে ৫০ হাজার হেক্টর জমি ভূট্টা চাষের আওতায় আনা হবে৷ এই উদ্যোগ কৃষদের আয় বাড়াতে সাহায্য করবে৷
সরকার রাজ্যের সার্বিক বিকাশ ও জনজাতিদের আর্থ সামাজিক মান্নোনয়নে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে৷ রাজ্যে পেপার ব্লক সড়ক নির্মাণ, সাব্রুমে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা, লাইট হাউস কর্মসূচিতে আবাসন নির্মাণ, জি১৪ আবাসন নির্মাণ, নতুন জাতীয় সড়ক গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে রাজ্যের বিকাশ তরান্বিত হবে৷
সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুুশান্ত কুমার নাথ সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের জন্য ৫০ হাজার টাকার চেক মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের হাতে তুলে দেন৷ সম্মেলনে পূর্ত দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী জি কে মালাকার ও অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী তপন চন্দ্র লোধ উপস্থিত ছিলেন৷
স্বাগত বক্তব্য রাখেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুুশান্ত কুমার নাথ৷ সম্মেলন উপলক্ষে সংগঠনের স্মরণিকা ‘নির্মাণ’র আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷