অনলাইন ডেস্ক, ২৮ জানুয়ারি।।টেলিভিশনে কোনও অনুষ্ঠান বা সংবাদ যদি হিংসায় প্ররোচনা দেয় তবে তা সরকারকেই বন্ধ করতে উদ্যোগী হতে হবে। বৃহস্পতিবার এ কথা জানাল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এদিন বলে, সংবাদ পরিবেশন নিয়ে যে আইন আছে তা কঠোরভাবে প্রয়োগ করা উচিত।
দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গেলে হিংসায় উস্কানি দেওয়া বন্ধ করতে হবে। কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে কিছুই করছে না।
উল্লেখ্য, টেলিভিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হিংসায় উস্কানি দেওয়া নিয়ে কয়েক বছর ধরেই চলছে বিতর্ক। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার একটি আবেদনের শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে। ২০২০-তে দিল্লিতে তাবলিগি জামাতের এক সভা নিয়ে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে খবর প্রকাশ করা হয়েছিল।
তার বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে ছিল বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠন। ওই সংগঠনগুলির আবেদনের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ আদালত কেন্দ্র, প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া এবং ব্রডকাস্টিং অ্যাসোসিয়েশনকে নোটিস পাঠায়।
আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিল, বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তাবলিগির সমাবেশের খবর প্রচার করা হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে উপস্থিত আইনজীবী বলেন, কয়েকটি ক্ষেত্রে টেলিভিশনে চলা আপত্তিকর অনুষ্ঠান সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
যদিও প্রধান বিচারপতি পাল্টা বলেন, সরকার ওই ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ করার জন্য বিশেষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধেই বিদ্বেষ ও হিংসা ছড়ানো উচিত নয়। একই সঙ্গে তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, আদালত চায় সরকার কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করুক।
এরপরই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এই পরামর্শ সরকারকে জানানো হবে। মেহতা এদিন আদালতকে আরও জানান, টেলিভিশনের বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে সরকার হস্তক্ষেপ করেছে। আদালত চাইলে এ বিষয়ে সরকার বিস্তারিত জানাতে পারে। কিন্তু লাইভ চ্যাটে কেউ যদি আপত্তিকর কিছু বলে থাকে তবে সেটা থামানো সম্ভব নয়।
এর প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা কারও মুখ বন্ধ করে দিতে চাই না। তবে যে ধরনের সম্প্রচার মানুষকে হিংসায় প্ররোচিত করে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। মানুষ তো টেলিভিশনে যা খুশি তা বলতেই পারেন। সেটা কীভাবে বন্ধ করা যায় সেটা সকলকে ভেবে দেখতে হবে।