আল জাজিরা জানায়, দারিদ্র্য ও স্বৈরাচার বিরোধী বিক্ষোভের মাধ্যমে দেশটির স্বৈরশাসক জেইন আল আবেদিন বেন আলীকে অপসারণের দশ বছর পর এই আন্দোলন শুরু হলো।
১৪ জানুয়ারি থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। শনিবার রাজধানী তিউনিসের দিকে শত শত বিক্ষোভকারী মার্চ করে। স্বৈরশাসক বেন আলীকে অপসারণের মধ্য দিয়ে যে আরব বসন্ত শুরু হয়, সেসময়ের স্লোগান দিতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। ‘আর কোনো ভয় নেই, রাজপথ এখন জনগণের’, ‘অপশাসনের পতন চায় মানুষ’- এমন স্লোগানে কম্পিত হয় তিউনিস।
টানা কয়েকদিনের সংঘর্ষ ও সহিংসতায় গ্রেপ্তার হওয়া বিক্ষোভকারীদের মুক্তির দাবিতে ব্যানার প্রদর্শন করে তারা। পুলিশ জানায়, গত সপ্তাহের সংঘর্ষে ৭০০ এর বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে অধিকার সংগঠন জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতের সংখ্যা অন্তত এক হাজার।
গত এক সপ্তাহে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও অর্থনৈতিক সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভে তরুণদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। তরুণেরা পুলিশের দিকে পেট্রল বোমা ও পাথর ছুড়ে আর পাল্টা টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ছুড়ে পুলিশ। বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে অন্তত ১৫টি শহরে।
পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে আরও বেশি ফুঁসে উঠে বিক্ষোভকারীরা। ফলে শনিবার উত্তাল হয়ে উঠে তিউনিস।মাহমুদ নামে এক তরুণ ক্যাফে কর্মী বলেন, ‘বিপ্লবের ১০ বছর পর আমরা তিউনিসিয়ায় কোনো পুলিশি রাষ্ট্র মেনে নিব না। এটা লজ্জাজনক।’
ওমর জাওয়াদি নামে এক হোটেল ম্যানেজার বলেন, ‘বিপর্যয়কর পরিস্থিতি। রাজনীতিবিদরা দুর্নীতিগ্রস্ত, আমরা এই সরকার ও ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই।’করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে তার ভাষ্য। গত মাস ধরে মাত্র অর্ধেক বেতন পাচ্ছেন বলে তিনি জানান।
এমন সময় এ বিক্ষোভ শুরু হলো যখন করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে তিউনিসিয়া। হাসপাতালে রোগীর চাপ সামলানো যাচ্ছে না, অর্থনীতি হুমকির মুখে। গত বৃহস্পতিবার একদিনে রেকর্ড ১০৩ জন মানুষ মারা গেছে। এখন পর্যন্ত মোট ৬ হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে, শনাক্ত হয়েছে দুই লাখের কাছাকাছি।
এদিকে বিক্ষোভ দমনে শনিবার থেকে সান্ধ্য কারফিউ জারি করেছে সরকার। ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।