অনলাইন ডেস্ক, ১৯ জানুয়ারি।। ফলন ভালো হলেও সংরক্ষণের অভাব ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে লাভের মুখ দেখে না কৃষকেরা। রাস্তাঘাটেই ফেলে দেয়া হয় কৃষিপণ্য, যার মধ্যে আছে টমেটোও। এমন দৃশ্য বাংলাদেশে নতুন নয়।কিন্তু মিসরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।
ফেলে না দিয়ে বা নষ্ট হওয়া রোধ করে রোদে শুকিয়ে টমেটো সংরক্ষণ করছেন তারা। এমনকি দেশের বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে শুকনো টমেটো।সোমবার মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে আসে।
টমেটো চাষ করে মিসরের কৃষকেরা যে ক্ষতির মুখে পড়তেন, সেটি পুষিয়ে নিচ্ছেন তারা ভিন্নভাবে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, টনের পর টন টমেটো শুকানো হচ্ছে রোদে। সেই টমেটো সংরক্ষণ করে সারা বছর খাওয়ার উপযোগী করছেন। বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে।
প্রাচীন মিসরীয় ঐতিহ্যের শহর লুক্সোরের বাসিন্দা আহমেদ থাবেতদের মতো কৃষকেরা এখন লোকসান পোষানোর নতুন সম্ভাবনা দেখছেন টমেটো শুকিয়ে।
নতুন ফলনের সময় আসলে আহমেদ থাবেত নিজের খামারে চাষ করা টমেটো পাশে এক মাঠে নিয়ে যান শুকাতে।এক বা দুই সপ্তাহ ধরে রোদে শুকাতে থাকে সেসব টমেটো।
মিসরীয় কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, রোদে শুকানোর পর এসব টমেটো প্যাকেজিং করা হয় এবং বিদেশের মার্কেটে রপ্তানি করা হয়।
মিডল ইস্ট আইকে কৃষক থাবেত বলছেন, ‘কৃষিপণ্য শুকিয়ে বাইরে রপ্তানি করা কৃষকদের জন্য খুব লাভজনক। স্থানীয় মার্কেটে পণ্য বিক্রি নিয়ে আমাকে এখন চিন্তা করতে হয় না। ’
টমেটো উৎপাদনে বিশ্বের চতুর্থতম দেশ মিসর। কিন্তু প্রতিবছর যে পরিমাণ টমেটো চাষ হয় তার এক শতাংশেরও কম বিদেশে রপ্তানি হয়।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে, উৎপাদন বেশি হলেও মিসরীয়দের খাওয়ার টেবিলে টমেটো খুব একটা দেখা যায় না। কারণ বার্ষিক উৎপাদনের ৫০ শতাংশই নষ্ট হয়।
রাজধানী কায়রো থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দূরে লুক্সোরে পুরো দেশের এক-তৃতীয়াংশ টমেটো চাষ হয়, যার পরিমাণ ৮০ লাখ টনের মতো। প্রাচীন শহরটিই এখন হয়ে উঠেছে শুকনো টমেটো সংরক্ষণের কেন্দ্র।
লুক্সোরে টমেটো শুকানোর প্রজেক্টের তদারকিতে যুক্ত কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আবদেল রাদি জানান, এ প্রজেক্ট এখন কৃষকদের জন্য অর্থ উপার্জনের বড় উৎস। এর ফলে কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিশাল সুযোগ উন্মুক্ত হয়েছে।