প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থ পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দিচ্ছে : মানিক সরকার

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৫ জানুয়ারি।। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লজ্জা আছে বলে জানা নেই। প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থ পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দিচ্ছে। ফলে রাষ্ট্রপতি কাছে যেতে হচ্ছে। এর দ্বারা স্পষ্ট মন্ত্রিসভার উপর মানুষের আর আস্থা নেই। সাহিত্য, কৃষি বিজ্ঞানী সকলে নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছে গোটা দেশে। আর শেষ পর্যন্ত সরকার কৃষক নেতৃত্বদের বলেছে কোর্টে যেতে। কিন্তু আন্দোলনরত কৃষকরা বলছে কোর্টে কেন যাবে তারা ? কোর্ট তো আইন প্রণয়ন করে নি।  আর এমনটা করে শেষ পর্যন্ত কমিটি গঠন করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে মাঠে নামানো হয়েছে।

কারণ এই সরকার চালাচ্ছে পুঁজিপতি থেকে যারা পুঁজিপতি। কৃষি আইন নিয়ে শুক্রবার ত্রিপুরা বামফ্রন্ট কমিটির উদ্যোগে টাউন হলে রাজ্য ভিত্তিক কনভেনশনে এমনটা জানান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। স্বাধীনতার ৭৩ বছরে কৃষকদের এতবড় আন্দোলন দেশে হয়েছে বলে কোন তথ্য নেই। প্রায় পাঁচশত মতো সংগঠন দাবি নিয়ে আন্দোলন করে চলছে দেড় মাসের অধিক সময় ধরে। দেশে পুঁজিপতিদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। সংখ্যায় কম হলেও অনুভূতি করা যায়। দেশের শ্রমজীবী আন্দোলন গড়ে তোলার যত সহজ, কৃষকদের এত বড় আন্দোলন গড়ে তোলা সহজ নয় বলে মত প্রকাশ করলেন বিরোধী দলনেতা।

তিনি আরো বলেন, এ আন্দোলন শুরু হওয়ার প্রথম থেকে বিল প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়েছিল। সরকার কৃষকদের কথায় কোন কান দিচ্ছিল না। আর কৃষকরা কোন পার্লামেন্ট দখল করতে যায় নি। দিল্লি দেশবাসীর অধিকার। দিল্লি কারোর পিতৃ সম্পত্তি নয়। কৃষকরা তাদের দাবি সনদ দিল্লি গিয়ে শুধু দিতে চেয়েছিল। সরকার কোন গুরুত্বই দেয় নি। তাই তাদের আন্দোলন চলছে। আন্দোলন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক দাবি করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম আইন ভাঙার অভিযোগও নেই। সরকার তাদের আবদ্ধ করতে অঘোষিত জেলে ভরে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু কৃষকরা বুঝতে পেরে যায় নি বলে জানান তিনি। আর এই নয়া কৃষি বিল রাজ্যসভা কি জেলখানায় পরিণত করে কণ্ঠ রুদ্ধ করে জনস্বার্থ এবং জাতীয় স্বার্থ বিরোধী আইন পাস করে নিয়েছে সরকার।

আর সরকার বলছে চীন আন্দোলনের উস্কানি দিচ্ছে। আবার বলছে বামপন্থীরাও উস্কানি দিচ্ছে। কৃষকরা কি শিশু, যে গতকাল তাদের জন্ম হয়েছে, তারা কিছু বুঝতে পারে না ? কিন্তু বিপরীতে বলতে গেলে আর এস এস দিয়ে এবং কিছু ইলেকট্রনিক মিডিয়া দিয়ে বিষ ছড়াচ্ছে সরকার। এটা কেমন সংবিধান? কৃষক ও সাধারণ মানুষের জন্য আন্দোলন সমর্থন করা অপরাধ তা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন বিরোধীদলীয় নেতা মানিক সরকার। এদিকে সি পি আই এম রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাশ বক্তব্য রেখে বলেন, বিজেপি নয়া উদারনীতি বাদীর ফলে ৩০ বছরে ৪০ লক্ষের অধিক কৃষক আত্মহত্যা করেছে। কোভিড পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে শ্রম কোড করেছে।

অপরদিকে কৃষকদের জমি থেকে উৎখাত করতে এই সর্বনাশা নীতি বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। আর কৃষকরা সবটাই বুঝতে পারছে। সরকার কোন রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনা না করে আইন পাশ করে নিয়েছে। সম্পূর্ণ পুঁজিপতিদের স্বার্থে। তাই এ আইন প্রত্যাহার করতে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে বলে দাবি তুলেন। দেশের সংবিধানের প্রতিটি অঙ্গের সর্বনাশ করছে। এ আইনের সমর্থনে রাজ্যেও কিছু দালাল দিয়ে মিছিল করছে সরকার। তাই সকলকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি। গায়ের জোরে বিলগুলি পাশ করে নিয়েছে সরকার। কিন্তু কৃষকরা পুলিশি অত্যাচার এবং প্রবল শীতের মধ্যে আন্দোলন করে আসছে।

৬০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আন্দোলন আরো তীব্র করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন সারা ভারত কৃষক সভার রাজ্য কমিটির সভাপতি অঘোর দেববর্মা। সম্মেলনে কৃষকদের স্বার্থে নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। মূলত এদিনের সম্মেলন থেকে আওয়াজ তোলা হয় কৃষক এবং জনস্বার্থে এ কৃষি আইনের বিরুদ্ধে রাজ্যবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। নয়তো প্রভাব পরবে সমগ্র মানুষের উপর। পাশাপাশি গোটা রাজ্যে এ আইন প্রত্যাহার করতে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যের মানুষকে এগিয়ে আসতে প্রচার করা হবে বলে জানা যায়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলের উপনেতা বাদল চৌধুরি সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?