শিশু তহবিলে কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে ডাচ সরকারের পদত্যাগ

অনলাইন ডেস্ক, ১৫ জানুয়ারি।। শিশুকল্যাণ খাতে কেলেঙ্কারির অভিযোগে দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেছে নেদারল্যান্ডস সরকার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুত্তে তার পদত্যাগপত্র রাজা উইলেম-আলেকজান্ডারের কাছে জমা দিয়েছেন।

দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, তবে করোনাভাইরাস সংকটের কারণে মন্ত্রিসভা তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে মার্চের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে।

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী রুত্তে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সরকার পুরো বিষয়টি মানসম্পন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে ভুল করা হয়েছে। এতে, হাজার হাজার বাবা-মার ওপর ভয়াবহ অবিচার হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘এ কেলেঙ্কারির জন্য বর্তমান মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা আছে। এটা সম্মিলিত সিদ্ধান্ত। পদত্যাগ করা ছাড়া আর বিকল্প নেই। ’ মার্ক রুত্তে গত ২০১০ সাল থেকে দেশটির তিনটি জোট সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

২০১২ সাল থেকে নেদারল্যান্ডসের ট্যাক্স কর্তৃপক্ষ অন্তত ২৬ হাজার অভিভাবকের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে শিশু ভাতা নেওয়ার অভিযোগ করে এবং প্রায় ১০ হাজার পরিবারকে লাখ লাখ ইউরো পরিশোধ করতে বাধ্য করে। এতে অনেক পরিবারে বেকারত্ব নেমে এসেছে, কেউ দেউলিয়া হয়েছে এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনাও ঘটেছে।

পরে কর কর্তৃপক্ষ গত বছর স্বীকার করেছে যে জাতিগত কারণ বা দ্বৈত জাতীয়তার কারণে অন্তত ১১ হাজার পরিবারকে এ অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যা নেদারল্যান্ডসে বর্ণবাদের চর্চার পরিচয় দেয়।

ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৬০০ পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী অ্যাটর্নি অরল্যান্ডো কাদির জানান, আমলারা বিদেশি নাম খুঁজে খুঁজে ‘জাতিগত প্রোফাইল তৈরি করে’ তালিকা তৈরি করে। সরকার ট্যাক্স বিভাগের এ ধরণের পদ্ধতির জন্য ক্ষমা চেয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য ৫০০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি বরাদ্দ দিয়েছে।

গত মাসে এ সংক্রান্ত একটি সংসদীয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মন্ত্রিসভা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিবেদনে ট্যাক্স বিভাগের ওই কর্মকাণ্ডকে ‘আইনের শাসনের মৌলিক নীতির লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান ক্রিস ভ্যান ড্যাম বিষয়টির নিন্দা করে তদন্ত প্রতিবেদনে মন্ত্রী, সাংসদ, বেসামরিক কর্মকর্তা ও আদালতের বিচারকদের সবাইকে এতে দায়ী করেন। প্রতিবেদনে সংসদে ওই বিষয়ে তথ্য সরবরাহ পদ্ধতিরও সমালোচনা করা হয়।

চলতি সপ্তাহে ক্ষতিগ্রস্ত ২০ পরিবার সুশাসনের ব্যর্থতা, জাতিগত বৈষম্য ও শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি অবহেলার অভিযোগ করে  মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?